যেভাবে গ্রেফতার হলেন এমপি লিটন


প্রকাশিত: ০৯:৩১ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৫
গ্রেফতারের পর এভাবেই মুখ লুকান এমপি লিটন

সৌরভ নামের এক শিশুকে হত্যা চেষ্টা মামলায় বুধবার গাইবান্ধা-১ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গ্রেফতারের সময় এমপি লিটন রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার পর অবশেষে বাড়িটি থেকে ডিবির উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলমের নির্দেশনায় লিটনকে গ্রেফতার করা হলো।

গত ২ অক্টোবর সুন্দরগঞ্জে এমপি লিটনের ছোড়া গুলিতে দুই পায়ে গুলিবিদ্ধ হয় চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন সৌরভ। এঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় লিটনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতার এড়াতে রোববার হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন লিটন, সোমবার তাকে হাজির হতে বলেন আদালত।

ডিবি পুলিশ সুত্র জানায়, সোমবার আদালতে উপস্থিত হওয়ার পর থেকেই লিটনকে নজরদারিতে রাখে ডিবি পুলিশ। তার প্রতিটি মুভমেন্টের অনুসরণ করতেন গোয়েন্দা সদস্যরা। তবে সোমবার তাকে গাইবান্ধার আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেয়া হলে পুলিশের নজরদারি কিছুটা কমে আসে।

কিন্তু বুধবার লিটনের আত্মসমর্পণের আদেশ স্থগিত করার পর থেকেই তার গতিবিধি নিবিড়ভাবে অনুসরণ করছিলেন ডিবি পুলিশ ও গোয়েন্দারা। বুধবার দুপুর থেকেই লিটনের সর্বশেষ গন্তব্য উত্তরায় তার আত্মীয়ের বাড়ির আশপাশে অবস্থান নেয় পুলিশ ও ডিবি সদস্যরা। ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশের অপেক্ষার পাশাপাশি গ্রেফতারের প্রস্তুতি নেন তারা।

সূত্র জানায়, সন্ধ্যার পর থেকেই উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরসহ আশপাশের সড়কগুলোতে থানা পুলিশ ও ডিবি কঠোর নজরদারি করে। নজর রাখা হয় লিটনের আত্মীয়ের বাসায় যাতায়াতকারীদের উপরও। রাত ৮টার পর গাইবান্ধা পুলিশের দুই সদস্য উত্তরায় আসে। অবশেষে রাত ১০টার দিকে ডিবি, স্থানীয় থানা পুলিশ ও গাইবান্ধা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি সূত্র দাবি করে, গ্রেফতারের সময় স্বাভাবিক ছিলেন এমপি লিটন। তার ভাবভঙ্গীতে বোঝা যাচ্ছিল তিনি রাতে গ্রেফতারের বিষয়টি আগে থেকেই অবগত আছেন। তাই পুলিশের সঙ্গে কথা না বাড়িয়ে তিনি তাদের গাড়িতে চড়তে প্রস্তুত হয়ে যান। কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জিজ্ঞেস না করেই শার্ট-প্যান্ট ইন করে পুলিশের সাদা মাইক্রোবাসে উঠে পরেন তিনি। পেছনে আরেকটি সরকারি জিপ গাড়িতে ছিলেন লিটনের স্ত্রী ও আরেকজন লোক।

গ্রেফতারের পরপরই লিটনকে নিয়ে ডিবির মিন্টু রোডের কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে আংশিক জিজ্ঞাসাবাদের পর সোয়া ১১টায় তাকে গাইবান্ধা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখনই তাকে নিয়ে গাইবান্ধার উদ্দেশে রওনা হয় ডিবির দুটি সাদা মাইক্রোবাস। সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখে মাথা নিচু করে দু`হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলেন এমপি লিটন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেসন্স বিভাগের (উপ-কমিশনার) মুনতাসিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুন্দরগঞ্জ থানায় দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার সকালে লিটনকে আদালতে হাজির করবে পুলিশ।’

তবে লিটনকে গাইবান্ধা নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের জানায়নি পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। ডিবি কার্যালয় থেকে লিটনকে বহন করা গাড়িটি বের হবার পরপরই ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন কর্মকর্তা।

এআর/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন