প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনেক দাবি কুড়িগ্রামবাসীর


প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০১৫

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে কুড়িগ্রামের সকল মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সর্বস্তরের মানুষ স্বতস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছেন। কারণ শেখ হাসিনার সরকার যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবার দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটেছে এই অবহেলিত জেলার।

এ জেলার অধিবাসীদের স্বপ্ন এবারের সফরে তিনি কুড়িগ্রামে মেডিকেল কলেজ, আন্তঃনগর ট্রেন, সোনাহাট ব্রিজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নদী ভাঙ্গন রোধে মহাপরিকল্পনার ঘোষণা দেবেন। এ রকম ১৫টি দাবিনামা পেশ করা হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

দাবিগুলো পূরণ হলে কুড়িগ্রামের আর্থ-সামাজিক বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে কুড়িগ্রামে মঙ্গা কমে এসেছে। শত বছরের দাবি ধরলা ব্রিজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালের ৬ মার্চ শেষ বার তিনি কুড়িগ্রামে আসেন। এসময় অনেক উন্নয়ন কর্মসূচির ঘোষণার পাশাপাশি ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

জেলার প্রায় ৪০ হাজার বেকার যুবক ও যুব মহিলা দুই বছরের জন্য চাকরি পান। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি মানুষের প্রত্যাশাও বেশি। পাঁচ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর আগমনে পিছিয়ে পড়া কুড়িগ্রাম জেলার মানুষ উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন। আশা করছেন তার সুনির্দিষ্ট ঘোষণার মাধ্যমে এ জেলার উন্নয়নের চাকা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি জাফর আলী জাগো নিউজকে জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি শেষ। তাকে বরণ করতে এবং প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ সফল করবার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পনের দিন ধরে ১৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকার মঞ্চ বানানো হয়েছে। কুড়িগ্রাম শহরকে সুন্দর করে সাজানো  হয়েছে। এখন শুধু তাকে বরণের অপেক্ষার প্রহর গুণছে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ। জেলাবাসীর ভাগ্যের দুয়ার খুলবে এমন প্রত্যাশা সবার।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, দাশিয়ারছড়ার দুঃখী মানুষগুলোর খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা দাশিয়ারছড়ায় আসবেন। আশা করি দাসিয়ারছড়া ছিটমহলটি যেভাবে উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। পাশাপাশি কুড়িগ্রামের জনসভায় জেলার উন্নয়নে চমক দেবার মতো কিছু ঘোষণা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেবেন।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ্ জাগো নিউজকে জানান, সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলসহ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে জনসভার জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তোলা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলাধীন ত্রিমোহনী এলাকায় অবস্থিত বীজ হিমাগার, কুড়িগ্রাম টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, জেলা পরিষদের কুড়িগ্রাম সদর ডাকবাংলো, ফুলবাড়ী মৎস্য কর্মকর্তার অফিস ভবন কাম ট্রেনিং সেন্টার, ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের দ্বিতল অ্যাকাডেমিক ভবন, ফুলবাড়ী উপজেলার অধুনালুপ্ত ছিটমহল দাশিয়ারছড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন, রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতল ভবন উদ্বোধন, চিলমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন, রাজিবপুর মহিলা কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন, রাজিবপুর থানা ভবন, রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন, নাগেশ্বরী উপজেলাা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নবনির্মিত ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন, জেলা পরিষদের ভুরুঙ্গামারী উপজেলা ডাকবাংলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এই ১৬টি প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৩৫ কোটি টাকা।

Kurigram
কুড়িগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবন কমপ্লেক্স, কুড়িগ্রাম নার্সিং হোস্টেলের নতুন ভবন, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ১শ শয্যা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ১শ শয্যা বিশিষ্ট ছাত্রী নিবাস, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের বিজ্ঞান ভবন, কুড়িগ্রাম পৌর অডিটোরিয়াম, কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়াম, মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন, খলিলগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন, কাঁঠালবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন, উলিপুরের কৃঞ্চমঙ্গল উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন, নাগেশ্বরী ডিগ্রি কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন, রাজিবপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, রৌমারীর কর্ত্তিমারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন ও উলিপুরের নামাজের চর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। এই ১৫টি প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ১শ কোটি টাকা।

কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও পঞ্চগড় জেলায় ১৮ লক্ষ গ্রাহককে সংযোগ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা। এরমধ্যে ফুলবাড়ী, দেবীগঞ্জ, বোদা, পঞ্চগড় ও ডিমলা উপজেলা রয়েছে। অধুনালুপ্ত ৫২টি ছিটমহলে পর্যায়ক্রমে ৩শ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করা হবে। এতে সংযোগ পাবে ১১ হাজার ৩২টি পরিবার। ব্যয় নির্বাহ হবে ৩৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রথম দফায় সংযোগ দেয়া হয়েছে ১০টি ছিটমহলের ৬৩ কি.মি. বৈদ্যুতিক লাইন। এতে ২ হাজার ৫শ ৬১টি পরিবার বৈদ্যুতিক সুবিধা পেয়েছে। যার মধ্যে কুড়িগ্রামের দাশিয়ারছড়ায় রয়েছে ৬শ ৪৩ পরিবার। এছাড়াও ৮ হাজার ৪শ ৭১ পরিবার সংযোগের অপেক্ষায় রয়েছে।

এমজেড/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।