বেতন নেই ত্রাণও নেই, সড়কে পোশাক শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০২ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২০

কারও দুই মাস, কারও এক মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া। করোনার কারণে বন্ধ কারখানা। জরুরি ত্রাণও পাননি তারা। তাই পেটে ক্ষুধা নিয়ে বাধ্য হয়ে সড়কে নেমেছেন উত্তরা দক্ষিণখান এলাকার তিনটি পোশাক কারখানার কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে বকেয়া বেতন-ভাতা ও জরুরি ত্রাণসহায়তার দাবিতে বিমানবন্দর গোলচত্বর এলাকার সড়ক অবরোধ করেন তারা। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বোঝানো হলেও সড়ক থেকে সরছেন না পোশাক শ্রমিকরা।

এদিকে রেদওয়ান, সিএনবি ও স্যার ডেনিম কারখানার মালিকপক্ষও পলাতক। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতিকে (বিজিএমইএ) পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছে পুলিশ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনার ভয়াল থাবায় বন্ধ পোশাক কারখানা ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অন্যান্য জেলার সঙ্গে কার্যত বিচ্ছিন্ন ঢাকা। হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ হওয়ায় অনেক কর্মীই পাননি বেতন-ভাতা। করোনার জরুরি ত্রাণও পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ এসব কর্মীর। বাধ্য হয়ে পেটে ক্ষুধা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন তারা।

সৌরভ নামে এক পোশাক শ্রমিক বলেন, ‘করোনার কারণে গার্মেন্ট বন্ধ করে দিছে। কিন্তু রেদওয়ান গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ তিন মাসের বেতন দেয়নি। করোনার লকডাউনে বেতন-ভাতা বকেয়া থাকায় কষ্টে যাচ্ছে দিন। যদি করোনার জরুরি ত্রাণও পেতাম তাহলেও অন্তত খাওয়া-দাওয়াটা চলত। সেটাও পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে সড়কে নামতে হয়েছে।’

আফরোজা নামে এক নারী পোশাক শ্রমিক বলেন, ‘কারখানা বন্ধ, বেতনও বন্ধ, পেটে দানাপিনাও প্রায় বন্ধ। বাসায় থাকাও দায়। বাসা ভাড়ার জন্য মালিকের তাগাদা শুনতে হচ্ছে। এক রকম নিরূপায় আমরা। কিন্তু মালিকপক্ষ এখনও আসেননি, কিছু বলেননি। তাই আমরাও সড়ক ছাড়ছি না।’

উত্তরার দক্ষিণখান জোনের এডিসি হাফিজুর রহমান রিয়েল জাগো নিউজকে বলেন, ‘গার্মেন্ট কর্মীদের সামলানোর দায়িত্ব তো পুলিশের না। কিন্তু সেটাই করতে হচ্ছে। আমরা গার্মেন্ট মালিকদের খোঁজ করেও পাচ্ছি না। বিজিএমইএকে জানানো হয়েছে।’

দক্ষিণখান থানার ফাঁড়ির ইনচার্জ সবুজ রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘রেদওয়ান গার্মেন্ট এর বেতন বকেয়া তিন মাসের, সিএনবি ও স্যার ডেনিম গার্মেন্টসের মার্চ মাসের বেতন বকেয়া। আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের একজন হোম কোয়ারেন্টাইনে, একজন পলাতক, আর আরেকজন অপারগ। বিজিএমইএকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কারো দেখা মেলেনি।’

অন্যদিকে রাজধানীর কমলাপুরে সর্দার ও বিন্নি নামে দুটি গার্মেন্ট কর্মীরাও বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।

মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তৈয়ব আলী জানান, আমরা সর্দার গার্মেন্ট এর মালিককে ডেকে বেতন পরিশোধের ব্যবস্থা করেছি। এখন সর্দার গার্মেন্টের কর্মীরা অবরোধ ছেড়ে বেতন নিয়ে চলে যাচ্ছে। বাকি রয়েছে বিন্নি। মালিকপক্ষকে খুঁজে পাচ্ছি না। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ কাজ করছে। বিজিএমইএকে জানানো হয়েছে।

জেইউ/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।