এমন অমানবিকতা কেন, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে অনেক সময় অমানুষেও পরিণত হয়। যখন আমি দেখি মায়ের একটু সর্দি-কাশি ও জ্বর হলে ছেলে, ছেলের বউ এমনকি তার স্বামী পর্যন্ত তাকে জঙ্গলে ফেলে আসে। এর থেকে অমানবিক কাজ আর হতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষের তো এ রকম অমানবিক হওয়ার কথা না। এভাবেই কথাগুলো বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্প্রতি টাঙ্গাইলের সখীপুরে করোনা সন্দেহে এক নারীকে জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে যান তার স্বামী-সন্তানসহ স্বজনরা। সোমবার (১৩ এপ্রিল) গভীর রাতে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাদিঘী গ্রামের এক জঙ্গলে তাকে পাওয়া যায়। পরে ইউএনওকে বিষয়টি জানালে ওই নারীকে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তবে শুধু টাঙ্গাইলে নয়, দেশের অনেক জায়গায় এমন ঘটনা ঘটছে। সেসব ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে ভিডিও কনফারেন্সে বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার সঙ্গে এ ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটবে?। তিনি বলেন, এ রকম আমরা বহু কাহিনি শুনি। এ অমানবিক হওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারো যদি সন্দেহ হয় তাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, পরীক্ষা করান, নিজেরাও সুরক্ষিত হন। এ প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যা যা করার প্রয়োজন সেগুলো মেনে চলুন।
‘কিন্তু কীভাবে একজন বাসা থেকে বের করে দেবেন বা একজন ডাক্তার যদি অসুস্থ হয় তাকেও এলাকা থেকে বের করে দিতে হবে? এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটবে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের মানুষের তো এ রকম অমানবিক হওয়ার কথা না। কাজেই এ বিষয়গুলো সবার দৃষ্টিতে আমি আনতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। যেকোনো দিন যে কেউ মরতে পারেন। আজকে আমি কথা বলছি, এখানে বসেও আমি মরতে পারি বা অন্য কেউ মরতে পারে। এটা কেউ বলতে পারে না যে আমি বেঁচেই থাকব। এটা একমাত্র আল্লাহ বলতে পারে। এই যে একটা ভাইরাস (করোনাভাইরাস) দেখা দিল, এভাবে একটা ভাইরাস এসে সারাবিশ্বকে ঘরবন্দি করে ফেলবে-এটা কি কেউ ভেবেছিল?’
এমইউএইচ/এসআর/জেআইএম