জুমার দিনে অন্যরকম বায়তুল মোকাররম, কাঁদলেন মুসল্লিরা
জুমার দিন দেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের এমন নিঃসঙ্গ ও নিথর অবস্থা আগে কখনও দেখেনি মুসল্লিরা। প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়াতে মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ আদায়ে সরকারের নির্দেশনায় লোকারণ্য বায়তুল মোকাররম আজ ছিল জনশূন্য। এখন তালাবদ্ধ বায়তুল মোকাররম।
মুসল্লিবিহীন নীরব জাতীয় মসজিদ যেন চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে। এই দৃশ্য দেখে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কষ্টের সীমা নেই। অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। মসজিদ তালাবদ্ধ থাকায় নামাজ না পড়ে ফিরে যান অনেক মুসল্লি।
রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে ১৯৬৮ সালে মসজিদটির নির্মাণের পর অনেক রাজনৈতিক উত্থান-পতন, আন্দোলনের সাক্ষী এই মসজিদটি। অনেক আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে সেখানে। কিন্তু কোনো সময়ই এ রকম মুসল্লিহীন ছিল না। সৌদি আরবেও বড় জামাত করে মসজিদে নামাজ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এজন্য দেশের জাতীয় মসজিদের দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যটির গেটগুলো এখন তালাবদ্ধ। স্বল্পসংখ্যক মুসল্লি নিয়ে আজ জুমার নামাজ শেষ হয়। কেউ কেউ সামাজিক দূরত্বে থেকে সেখানকার ফুটপাতে নামাজ পড়েন।
এক মুসল্লি ভেতরে ঢুকতে না পেরে বাইরে নামাজ পড়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, মসজিদে নামাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে কিন্তু মনে টানে না তাই নামাজ পড়তে এসেছি। আল্লার কাছে দোয়া করেছি যেন, এই পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হয়।
প্রসঙ্গত, প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ রোধে জনসমাগম এড়াতে মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ আদায় করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। শুধু নামাজ নয়, সব ধর্মের ব্যক্তিদের ঘরে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় বলা হয়, মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে সম্মানিত খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেম মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে অনধিক পাঁচজন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে এর বাইরে মুসল্লি মসজিদের ভেতরে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। শুক্রবার জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আর সারাদেশে ওয়াজ মাহফিলসহ অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা এবং অন্য ধর্মের অনুসারীদেরও উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এইচএস/এসআর/এমএস