বিমানবন্দর সড়কে দীর্ঘ যানজট, ঢাকা কি করোনামুক্ত?
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন বলাকা ভবনের অদূরে মূল সড়কে ক্রমাগত সাইরেন বাজিয়ে চলেছে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু সামনে প্রাইভেটকার, জিপগাড়ি, মাইক্রোবাস, বড় লরি, পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য যানবাহন থাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি এক ইঞ্চিও যেতে পারছে না।
একজন ট্রাফিক পুলিশ অফিসারকে এগিয়ে এসে অ্যাম্বুলেন্সটিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জায়গা করে দিতে পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে আসার জন্য অন্যান্য গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। কিন্তু সামনের গাড়ি নড়াচড়া না করায় অ্যাম্বুলেন্সটিকে আগের জায়গাতে থেকেই সশব্দে সাইরেন বাজাতে দেখা যায়। ততক্ষণে সামনে ও পেছনে শতাধিক গাড়ির জট লেগে যায়।
এ দৃশ্যপট আজ সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার। ঢাকার বাইরে থেকে যানবাহন প্রবেশ ঠেকাতে বিমানবন্দরের মূল সড়কে পুলিশ টহল বসালে এ দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা একটি প্রাইভেটকারের মালিককে উদ্দেশ্যে করে বলছিলেন, ‘ঢাকার বাইরে থেকে যানবাহন প্রবেশ নিষেধ- এ সরকারি নির্দেশ কি আপনি জানেন না, ব্যাক-ডালা ভর্তি বাজার-সদাই। আর বলছেন, উত্তরা থেকে আসছি, গাড়ি সাইড করেন, দেখছি আপনি কোথা থেকে এসেছেন?’
ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ ও অত্যাবশ্যক যানবাহন ছাড়া সকল ধরনের যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সরকারি এ আদেশ লঙ্ঘিত হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ তথা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার স্বার্থে পুলিশ প্রশাসন থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হলেও নানা অজুহাতে আজও (সোমবার) রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে দিয়ে অসংখ্য মানুষ ও যানবাহন প্রবেশ করছে।
অবাধ প্রবেশ ঠেকাতে পুলিশ সংক্রিয় হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে টহল বসিয়েছে। কিন্তু মানুষ স্বপ্রণোদিত হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকছে না। শুধু ঢাকার বাইরে থেকেই নয়, রাজধানীতে যারা রয়েছেন তারাও নানা অজুহাতে যানবাহন নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন টহল পয়েন্টে পুলিশ যানবাহনের মালিকের কাছ থেকে বাইরে বের হওয়ার সন্তোষজনক জবাব না পেলে মামলাও করছেন।
জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক আজ সকালে উত্তরা রাজউক মোড় থেকে আজিমপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখেছেন, রাস্তায় অসংখ্য যানবাহন চলাচল করছে। কেউ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কেউ বাজার আবার কেউবা হাসপাতালে রোগী দেখতে যাওয়াসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে ছোটবড় যানবাহন নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন। তবে আইনশৃ্ঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সক্রিয় হয়ে টহল বসিয়ে জেরা করতে দেখা গেছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে মামলা দায়ের করতেও দেখা গেছে। কোথাও কোথাও রিকশা আটকে উল্টে রাখতে দেখা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তরা এলাকার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ঢাকায় যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করছেন। এক্ষেত্রে অনেকেই প্রয়োজনেই বাইরে গিয়ে আটকা পড়েছেন এবং না ফিরে আসলে আর্থিকসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানাচ্ছেন।
তবে পরিতাপের বিষয় হলো অনেকেই এখনও ফাঁকা রাস্তা পেয়ে নানা অজুহাতে ঘুরতে বের হচ্ছেন। তবে তারা পারতপক্ষে ছাড় দিচ্ছেন না বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
এমইউ/বিএ/এমকেএইচ