পোশাক শ্রমিকদের ঢাকায় ফেরায় ছুটির প্রত্যাশিত ফল নিয়ে শঙ্কা
সরকারের ঘরে থাকার সুস্পষ্ট নির্দেশনা এবং তা পরিপালনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশে শ্রমজীবী মানুষের ঢাকায় ঢল নামা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
কমিশন বলছে, গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় সড়ক, মহাসড়ক, ফেরিঘাটে শ্রমজীবীদের স্রোত। যেখানে সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কোনো পরোয়াই করা হয়নি। এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির প্রত্যাশিত ফলাফল পুরোটাই এখন শঙ্কার মধ্যে পড়েছে।
রোববার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলে কমিশন। পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে যেখানে সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই, সেখানে নিজেকে ঘরবন্দি রাখার সাময়িক কষ্ট হলেও তা স্বীকার করে নিয়ে ব্যক্তি থেকে সমষ্টি, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তা অনুসরণ করার আহ্বান জানায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারহানা সাঈদ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। মানবিক এ বিপর্যয়কে প্রতিহত করার লক্ষ্যে বিশ্বের সব জনগোষ্ঠীর দায়িত্বশীল আচরণের প্রয়োজন। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং সামাজিক দূরত্ব অপরিহার্য বিবেচনায় সর্বসাধারণকে ঘরে থাকার জন্য সরকার বিভিন্ন অনুশাসনসহ গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। কিন্তু শ্রমজীবীরা ছুটির আমেজ নিয়ে সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি মাথায় না রেখে গাদাগাদি করে শহর ছাড়তে থাকেন, যা প্রকারান্তরে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।’
‘পরবর্তীতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে জনগণ যাতে ঘরে থাকেন, সে লক্ষ্যে সরকার এই সাধারণ ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করে। কিন্তু এই বর্ধিত ছুটির বিষয়ে গার্মেন্ট কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশে শ্রমজীবী মানুষের ঢল নামে। গত শনিবার সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে, রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ও মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটের জনস্রোত সামাজিক দূরত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কোনো পরোয়াই করেনি। এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব কোনোভাবেই কাম্য নয়। এতে করে একদিকে যেমন শ্রমজীবী একজন মানুষ নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন, তেমনি তার আশপাশের প্রতি ব্যক্তিকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছেন। ফলে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির প্রত্যাশিত ফলাফল পুরোটাই এখন শঙ্কার মধ্যে পড়েছে।’
‘পোশাক কারখানায় যোগদান করা শ্রমিক-কর্মচারীর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি মোকাবিলায় মালিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সংকটকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল ও মানবিক আচরণ করুন’ - বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
জেইউ/জেডএ/এমএস