দেশে করোনায় আক্রান্ত বেড়ে ৫১, সুস্থ ২৫

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৩:৪১ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২০

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুইজন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে। ভাইরাসটি থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ছয়জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন।

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজন করোনায় আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন। দুজনই পুরুষ। একজনের বয়স ৫৭ বছর এবং অন্যজনের বয়স ৫৫ বছর। একজন সৌদি আরবফেরত হলেও অন্যজনের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। একজন ডায়াবেটিসে ভুগছেন। অন্যজন ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং দুজনই সুস্থ আছেন। যার বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই, তার সংক্রমিত হওয়ার ব্যাপারে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের তিন দিন পরপর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। তিন দিনের ব্যবধানে কারও নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরও একবার পরীক্ষা করা হয়। পরপর দুইবার নেগেটিভ রিপোর্ট এলে তাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় নতুন আরও ছয়জন করোনামুক্ত হয়েছেন। ফলে সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২৫ জন। নতুন সুস্থ হওয়া ছয়জনের মধ্যে একজনের বয়স ৭০ বছর, চারজনের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ৪০ থেকে ৫০ বছর। তাদের মধ্যে চারজন পুরুষ ও দুজন নারী। এদের মধ্যে একজন নার্স রয়েছেন।

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। যাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করা হবে, তাদের প্রত্যেকের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে চাই। কোনো আক্রান্ত ব্যক্তি যেন সমাজে রয়ে না যান, যার কাছ থেকে সংক্রমণটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমরা প্রত্যেকটি করোনা রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চাই। এক্ষেত্রে দেশের মানুষের সহযোগিতা চাই।

অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ইতোমধ্যেই ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বেশ কিছু মৃত্যু নিয়ে জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের সৎকার হওয়ার আগে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তারা কেউ করোনা রোগী ছিলেন না। তাই মৃত্যু হলেই করোনাভাইরাস বলে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইইডিসিআরের হটলাইনে কল এসেছে মোট ৩ হাজার ৬৩৭টি। এর মধ্যে ২ হাজার ৫০৯টি কল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে গেছেন ১৩ জন। মোট আইসোলেশনে রয়েছেন ৭৫ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৩৮ জন।

ব্রিফিংয়ের শুরুতে বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরেন ডা. ফ্লোরা। তুলে ধরেন করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে ঘরে থাকাসহ প্রয়োজনীয় করণীয়ও।

চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ৭ লাখ ৮৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন প্রায় ৩৭ হাজার ৮২০ জন। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে সংক্রমণ বেড়েছে। সবশেষ হিসাবে করোনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৫১ জন, মারা গেছেন ৫ জন। এছাড়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২৫ জন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এই ছুটি আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়বে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীও।

এমইউ/এইচএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।