স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ওএমএসের আটা
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের আতঙ্কে মানুষ এখন দিশেহারা। বাংলাদেশেও চলছে সাধারণ ছুটি। বন্ধ রয়েছে সবকিছু। এতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। সবকিছু বন্ধ থাকায় কাজের অভাবে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন তারা। এ সময় নিম্ন আয়ের মানুষ ভরসা করছে সরকার নির্ধারিত খোলাবাজারের ওপর। তবে এবার সেই স্বল্প আয়ের মানুষের কাছেই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলাবাজারের ওএমএসের আটা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার খোলাবাজারে ওএমএসের আটা প্রতি কেজি ১৮ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে, যা খোলাবাজরে ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে। এই মূল্য লেখা একটি ব্যানার ট্রাকে ঝুলানোও আছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে নেয়া হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ টাকা। পাঁচ কেজি আটায় নেয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। প্রতিজন ক্রেতার কাছে ১০ টাকা করে বেশি আদায় করছে ওএমএসের ট্রাক ডিলাররা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে ফোন করে এমনই অভিযোগ করেছেন এক সচেতন ভোক্তা। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মতিঝিল এজিবি কলোনিতে ওএমএসের চাল-আটা বিক্রির ট্রাকে অভিযান চালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম। এ সময় বাবুল শিকদারের ট্রাক সেলে বেশি দামে আটা বিক্রির তথ্য হাতেনাতে প্রমাণ পান অভিযান পরিচালনাকরী ভোক্তা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল।
ট্রাক ডিলার বলছেন, পলিথিন ব্যাগে আটা দেয়া হচ্ছে তাই কেজিতে দুই টাকা বেশি নিচ্ছেন। কিন্তু ক্রেতাদের অভিযোগ একটি পলিথিন ব্যাগের জন্য ১০ টাকা নেয়া কোনো যুক্তি হতে পারে না।
এ বিষয়ে আব্দুল জব্বার মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ আতঙ্কিত। নিম্ন আয় ও শ্রমজীবী মানুষ অর্থ ও খাবারের অভাবে খুব কষ্টে দিন পার করছেন। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মানুষের এ দুর্দিনে এগিয়ে এসেছেন। এমন সময় সরকারের ন্যায্যমূল্যে দেয়া খোলাবাজারের (ওএমএস) আটা বেশি দামে বিক্রি করা খুবই অমানবিক। পলিথিন ব্যাগের নামে প্রতি কেজি আটায় দুই টাকা বেশি নেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তারা কৌশলে বেশি দাম নিচ্ছে এবং ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা করছে, যা আইন পরিপন্থী। তাই সরকারি ওএমএস চাল-আটা বিক্রয়ে প্রতারণার অপরাধে বাবুল শিকদারের ট্রাক সেলকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি ট্রাক ডিলারকে সতর্ক করা হয়েছে। যেন বেশি দামে আটা বিক্রি না করে।
তিনি জানান, ভোক্তা অধিদফতরের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে দাম বেশি নেয়ার বিষয়টি জানাব। তারা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।
এসআই/এমএফ/জেআইএম