দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন : বেকায়দায় ইসি


প্রকাশিত: ০২:১৮ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০১৫

মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইন পরিবর্তন করে সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কারণ এ সংক্রান্ত বিধি বিধান পরিবর্তন ছাড়াও সব প্রার্থীর জন্য প্রতীক বরাদ্দ, নির্বাচন নিয়ন্ত্রণে রাখা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা নিয়ে বিপাকে পড়তে পারে ইসি।

এছাড়া দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সব নির্বাচনেই চ্যালেঞ্জ থাকে। চ্যালেঞ্জ আগেও ছিল এখনও আছে, দলীয়ভাবে হলেও থাকবে। তবে নতুনভাবে নির্বাচন করলে কোনো অসুবিধা হবে না। এর মধ্যে আমরা সংশোধিত আইন অনুযায়ী বিধিমালাও সংশোধন করবো।

দেশে বর্তমানে পাঁচ ধরনের স্থানীয় সরকার রয়েছে। এগুলো হলো-ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ ও সিটি কর্পোরেশন। এগুলোর মধ্যে কেবল জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধিমালা করা হয়নি। বাকি চারটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচনই এদেশে দীর্ঘদিন ধরে নির্দলীয়ভাবে সম্পন্ন করা হচ্ছে। আইনেই নির্দলীয়ভাবে এসব নির্বাচন সম্পন্ন করার কথা বলা হয়েছে।

ইসির একাধিক সূত্র জানায়, কোনো গবেষণা বা মূল্যায়ন ছাড়াই শত বছরের স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। স্থানীয় সরকারের সব স্তরে দলীয়ভাবে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ভারতের উদাহরণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ভারত নিজেই এ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে। বাংলদেশে এটি প্রতিষ্ঠিত হলে দলাদলি ও হানাহানি বাড়বে। প্রকট হবে বিভেদ।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ। এই নির্বাচন দলীয় হলে প্রার্থীরা আরো বেশি প্রভাব খাটাবে। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন হবে বেশি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে এখন মেম্বার-চেয়ারম্যানরা সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় থাকেন। কিন্তু দলীয়ভাবে নির্বাচনের পর তারা ক্ষমতাসীন দলের না হলে সরকারের কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন বা সরকারই তাদের দূরে সরিয়ে রাখবে। ফলে বরাদ্দ কমে যাবে। এতে ক্ষতি হবে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য মহাবিপদ ডেকে আনবে।

প্রসঙ্গত, সোমবার স্থানীয় সরকার পরিচালনার সংশোধিত পাঁচটি আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) আইন-২০১৫’, উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন-২০১৫’, ‘জেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন-২০১৫’, স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) (সংশোধন) আইন-২০১৫’ ও স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) (সংশোধন) আইন-২০১৫’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সংশোধিত আইন অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশন ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রেও মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্বাচন না হলে সরকারি প্রশাসন থেকে কাউকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া যাবে।

এইচএস/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।