পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘২৫ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। ১৯৭১ সালের এ দিনে বাংলাদেশে সংঘটিত হয় বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ ও নিষ্ঠুরতম গণহত্যাগুলোর একটি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সেই কালরাতে অতর্কিত নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি জাতীয় চার নেতাকে, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ এবং নির্যাতিত মা-বোনকে যাদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মহান স্বাধীনতা। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) এ বাণী দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি দীর্ঘ ২৩ বছর পাকিস্তানি শাসকদের নিপীড়ন এবং বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে সাধারণ নির্বাচনে জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলার ১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে স্বাধীনতার ডাক দিয়ে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম; এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা’।’
‘পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। পূর্ব বাংলায় সৈন্য সমাবেশ করে। ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চ লাইটের নামে গণহত্যার আদেশ দিয়ে গোপনে পাকিস্তানে চলে যায় ইয়াহিয়া খান। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সেই কালরাতে অতর্কিত নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। মাত্র ৯ মাসে পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর-রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর সদস্যরা সারা দেশে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করে। এত অল্প সময়ে এত মানুষ হত্যা করার নজির পৃথিবীতে আর কোথাও নেই। সম্ভ্রমহানি করা হয় ২ লাখ মা-বোনের। লাখ লাখ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট করা হয়। বাড়িঘর ছেড়ে প্রায় ১ কোটি মানুষ ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়। অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয় আরও প্রায় ৩ কোটি মানুষ।’
‘আওয়ামী লীগ সরকার ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ মহান জাতীয় সংসদে এ দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এবং ২০ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়।’
এফআর/এমএস