করোনার কিট উৎপাদনে অনুমোদন পেল গণস্বাস্থ্য, অপেক্ষা কাঁচামালের
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ১৯ মার্চ ২০২০
করোনাভাইরাস শনাক্তে কিট উৎপাদনে সরকারের অনুমোদন পেয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। গণমাধ্যমের কাছে এ দাবি করেছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আজকে সরকারের কাছ থেকে করোনার কিট তৈরির অনুমোদন পেয়েছি। এর কাঁচামাল যুক্তরাজ্য থেকে আসতে সাতদিনের মতো সময় লাগবে। কাঁচামাল এলেই আমরা উৎপাদনে যাব।’
বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফরহাদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব কথা জানানো হয়। এদিকে গত বুধবার (১৮ মার্চ) গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র করোনার কিট তৈরির ঘোষণা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি থেকে দাবি করা হয়, স্বল্পমূল্যের ওই কিট দিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটে করোনা শনাক্ত করা সম্ভব। ওই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন ড. বিজন কুমার শীল।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘করোনা শনাক্তে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান সফল কিট উদ্ভাবন করতে পারেন, তাহলে তো খুবই ভালো। যদি এটা সফল কিট হয়, আসলেই যদি তা কাজে লাগে তাহলে আমরা অবশ্যই খুশি হবো। এটা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর দেখছে। অনেক সদস্য নিয়ে ইতিমধ্যে এটা নিয়ে একটা বিশেষজ্ঞ কমিটি বানানো হয়েছে বলে আমি জানতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘দুটো বিষয় আমাদের জানতে হবে। প্রথমত এটার পিসিআর কী? আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে এটা ফলাফল পাওয়া যায়। বোঝাই যাচ্ছে এটা একটা র্যাপিড টেস্ট। র্যাপিড টেস্টের বিষয়ে অন্যান্য দেশে উদ্ভাবন হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। সেগুলোর বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। আমরা নিজেরাও চাচ্ছি, এ ধরনের একটা র্যাপিড টেস্ট যদি পাওয়া যেত তাহলে যে সব মানুষ উদ্বেগে আছেন অথবা আমরা দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্তে আসতে পারি যে, করোনা থাকতে পারে কি না।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কিন্তু যেটা আমরা জেনেছি যে, ফলস নেগেটিভ হওয়ার হার খুব বেশি। ১০ থেকে ১৫ পার্সেন্ট হচ্ছে ফলস নেগেটিভ। অর্থাৎ একটা লোকের মধ্যে করোনাভাইরাস আছে কিন্তু পরীক্ষা করে বলে দিল তোমার মধ্যে ভাইরাস নেই তাহলে ওই লোকটা অবাধে ঘোরাফেরা করবে। সে তার নিজের ব্যক্তিগত কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেবে না। এ ধরনের ঝুঁকি আমরা নিতে পারি না। যদি ফলস পজিটিভ হয় তাও আমরা গ্রহণ করতে পারি। কারণ আক্রান্ত রোগীকে আমরা আবারও কনফারমেশন টেস্ট করতে পারব। কিন্তু ফলস নেগেটিভ হলে তো সমস্যা। করোনা আছে কিন্তু টেস্টের ফলাফল বলছে নেই, এ ঝুঁকি আমরা নিতে পারি না। এটা যদি র্যাপিড টেস্ট হয় তাহলে আমরা দেখব যে, ফলস নেগেটিভের হার বা অ্যাকুরেসির হার কত? যদি অ্যাকুরেসির হার বেশি থাকে, তাহলে অবশ্যই আমরা এটাকে স্বাগতম জানাব।’
‘দ্বিতীয়ত, এটা যদি পিসিআর টেস্ট কিট হয়, তাহলেও আমরা একই জিনিস দেখব যে, এটার রিলায়েবিলিটি কতটুকু। যদি ভালো হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা স্বাগত জানাব। আমরা তো চাই, ব্যাপকসংখ্যক কিট আসুক এবং খুব স্বল্পমূল্যে ব্যাপকসংখ্যক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারি।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটা ক্ষণ পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের মনে হয় না, চীন থেকে আমাদের চিকিৎসক আনার দরকার রয়েছে। চীনের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। এই করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে আমরা চীনকে অনেকগুলো প্রটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে সহযোগিতা করেছি। চীনও আমাদের রি-এজেন্ট দিয়ে সহযোগিতা করছে। চীনের অনেকগুলো পিপি আছে। চেষ্টা করছি যে, চীন থেকে পিপি নেয়ার জন্য। পিপি আসবে। কালকে বা পরশু পিপি আসবে। এটা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পার্সোনাল প্রটেকশনের বিষয়টা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসক নার্সরা দেখবেন। প্রতিদিন আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যখন যে পরামর্শ বা নির্দেশনা দেয়া দরকার, তা দেয়া হবে। যখন যে সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার সেটা নেয়া হবে। সরকার সেটা নিচ্ছে।’
জেইউ/এফআর/পিআর