২৯৯ ওমরাহ যাত্রীসহ ৩৯৪ জনকে নিয়ে ফিরছে বিমান
সৌদিতে আটকে পড়া ২৯৯ জন ওমরাহ যাত্রীসহ মোট ৩৯৪ জনকে নিয়ে দেশে ফিরছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় তাদের বহনকারী ফ্লাইটটি (বিজি-২৩৬) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
এর আগে বিমানের বিশেষ এই ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ২৮ মিনিটে জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল-আহসান জাগো নিউজকে বলেন, বিকেল ৪টা নাগাদ ফ্লাইটটি দেশে ফেরার কথা রয়েছে। যাত্রীরা দেশে ফিরলে প্রথমে তাদের স্ক্রিনিং করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী কারও মধ্যে করোনার লক্ষণ-উপসর্গ না পাওয়া গেলে ইমিগ্রেশন শেষে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।
সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত রোববার (১৫ মার্চ) থেকে রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা ও মদিনায় বিমানের সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহ এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এ সময়ের মধ্যে কেউ দেশে ফিরতে পারবেন না। তাই সৌদিতে আটকে পড়া ওমরাহ যাত্রীদের আনতে বিশেষ ফ্লাইট পাঠিয়েছে বিমান।
করোনা প্রাদুর্ভাবে ইতোমধ্যে অধিকাংশ রুটেই ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে বিমান। সর্বশেষ মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এর আগে ওমান, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও ভারতে ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দেয় বিমান।
এদিকে দেশে আরও দুইজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ জনের নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে পরীক্ষা করার পর এ দুজনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ জনে।
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ডা. ফ্লোরা জানান, নতুন করে যে দুজন আক্রান্ত হয়েছেন, তারা পুরুষ। একজন ইতালি ও অপরকজন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছেন। একজন ছিলেন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে, আরেকজন একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি একজন আক্রান্তের সংস্পর্শে থেকে সংক্রমিত হয়েছেন। দেশে এখন মোট ১৬ জন আইসোলেশনে আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৪৩ জন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে করোনাভাইরাসের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে নাগরিকদের করণীয় তুলে ধরেন ডা. ফ্লোরা।
এর আগে গত ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো তিনজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় আইইডিসিআর। পরে আরও দুজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কথা জানায় সরকার। এদের মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে যান। ১৬ মার্চ আরও তিনজন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য জানায় আইইডিসিআর। আর মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে করোনায় মোট ১০ জন সংক্রমিত হলেও তিনজন সুস্থ হয়ে যাওয়ায় এখন চিকিৎসাধীন আছেন ৭ জন।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার।
চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ১৬২টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বিশ্বব্যাপী ৭ হাজার ১৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৫৫০। অপরদিকে, হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৯ হাজার ৮৮১ জন।
এআর/বিএ/জেআইএম