করোনা সন্দেহে হাসপাতালে সৌদিফেরত বৃদ্ধ দম্পতি
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১০:৩২ এএম, ১০ মার্চ ২০২০
সৌদি আরব ফেরত এক বৃদ্ধ দম্পতিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আনুমানিক ৭০ বছর বয়সী ওই দম্পতির শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা থাকায় তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান বিমানবন্দরে কর্মরত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ।
তিনি বলেন, সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই দম্পতি সৌদি এয়ারলাইন্সযোগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আসেন। হেলথ কার্ডে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানতে পারেন, বিগত বেশ কিছুদিন ধরে তারা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তারা সম্প্রতি সৌদিপ্রবাসী ছেলের কাছে বেড়াতে যান। তারা সৌদি যাওয়ার আগে তাদের ছেলে চাকরির সুবাদে চীন সফর করেছিলেন। সৌদি যাওয়ার পর থেকে তাদের শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। সেখানে চিকিৎসা নিলেও তারা সুস্থ হননি।
ডা. সাজ্জাদ আরও বলেন, যেহেতু তার ছেলের চীন ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে তাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে সন্দেহে তাদের হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখার জন্য পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গতকালও ইতিলি, স্পেন ও সিঙ্গাপুরফেরত তিনজনকে করোনোভাইরাস সন্দেহে সরাসরি হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন ইতালিফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ তিনজন ছাড়া আরও দুজনকে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
রোববার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সম্মেলন কক্ষে করোনাভাইরাস সম্পর্কিত নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে রেখে লক্ষণ-উপসর্গভিত্তিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারা বর্তমানে ভালো আছেন। এ মুহূর্তেই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। রাস্তাঘাটে চলাফেরায় সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১৪ হাজার ৪২২ জন আক্রান্ত হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৪ হাজার ২৭ জন। এছাড়া এই ভাইরাসে আক্রান্ত ৬৪ হাজার ৮১ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে।
বিশ্বের ১১৫টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপরই এই ভাইরাস চীনের অন্যান্য শহরসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চীনে। সেখানে ৮০ হাজার ৭৫৪ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ১৩৬ জন।
চীনের পর ইতালিতে সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনা। সেখানে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ১৭২ এবং মৃতের সংখ্যা ৪৬৩। চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে ৭ হাজার ৫১৩ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৫৪ জন।
অপরদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে সবচেয়ে বেশি প্রকোপ ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ১৬১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ২৩৭ জন।
এমইউ/বিএ/এমএস