ঢাবি পিছিয়ে নেই : ড. এমাজউদ্দীন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের এমন কোনো অর্জন নেই যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্পর্শ করেনি। এখন বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করলে মনে হয় আমরা পিছিয়ে পড়েছি। তার মানে এই নয় যে, আমরা পিছিয়ে পড়ছি। বলতে হবে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের চেয়ে এগিয়ে গেছে। আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (ডুয়া) ৬৭ বছরে পর্দাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
বিকেল সাড়ে ৪টায় অ্যালামনাই ফ্লোরের সামনে জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েনের পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড্ডয়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে অ্যালামনাই ফ্লোরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটেন আমন্ত্রিত অতিথিরা। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা।
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রকীব উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, সাবেক উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এস এম ফায়েজ, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের মহাসচিব দেওয়ান রাশেদুল হাসান।
এমাজউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রয়োজনে হয়তো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলীয়করণ করা হয়ে থাকে, কিন্তু আমি বলবো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্ষেত্রে এমন যেন না করা হয়। অযোগ্যদের যেন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া না হয়। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধা তৈরির কারখানা। মেধাবী তৈরি করার স্থানগুলো মেধাবীদেরই ছেড়ে দেয়া উচিত।’
শিক্ষকদের আরও বেশী মর্যাদা দেয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাবেক উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী তার বক্তৃতায় বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশকে দিয়েছে আদর্শের পরিপূর্ণতা। এই প্রতিষ্ঠান একটি জাতিকে দিয়েছে স্বাধীনতা, দিয়েছে আত্মগৌরব। এখানকার যারা অ্যালামনাই সবাই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে দেশের মর্যাদা তুলে ধরছেন।’
সাবেক উপাচার্য ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. এস এম ফায়েজ বলেন, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনে আমরা যারা আছি, আমরা সবাই মিলে একটি পরিবার। আমরা আমাদের সবার সুখ-দুঃখগুলো এখানে বসে একসঙ্গে শেয়ার করতে পারি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতিকে সারা বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের ভর্তি পরীক্ষা কখনোই প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি, হতে পারেনা। আজকে যে পরীক্ষা হলো, কেউ বলতে পারবেনা এখানে কোনো জালিয়াতি হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘আমাদের ক্রমান্বয়ে ছাত্রসংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সে হিসেবে আমরা সুযোগ-সুবিধা তৈরি করতে পারিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন উদ্যোগ নিলে অনেক কিছুই সম্ভব হবে।’
অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রকীব উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে শিক্ষকদের মর্যাদা নিয়ে বির্তক শুনি। তাদের মর্যাদার তুলনা হয় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শিক্ষকদের সবসময় সম্মান দেন। কিন্তু কেউ কেউ তাকে ভুল বুঝিয়েছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের মর্যাদা সবার উপরে। এটা প্রোটোকলের বিষয় নয়। তিনি সরকারের কাছে শিক্ষকদের দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানান।
সন্ধ্যায় অ্যালামনাই ফ্লোরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শেষ হয়।
এমএইচ/একে/এমএস