বীমার টাকা গ্রাহকরা যেন সঠিকভাবে পায় : প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৬:২৬ পিএম, ০১ মার্চ ২০২০

আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বীমা সংস্থাগুলোকে দুর্নীতিমুক্ত করতে কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘গ্রাহকরা বীমার ক্ষেত্রে প্রিমিয়ামটা যাতে সঠিকভাবে দেয় সেটাও যেমন প্রয়োজন, বীমার টাকা যেন সঠিকভাবে পায় সেটা নিশ্চিত করাটাও জরুরি। যতটুকু ক্ষতি ততটুকুই যেন ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। ফাঁকি দিয়ে যাওয়ার প্রবণতাটাও দূর করতে হবে।’

রোববার (১ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উৎক্ষেপণ করেছি, সারাদেশে ব্রড ব্র্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করেছি, মোবাইল ফোন সবার হাতে হাতে, ফোরজি আমরা চালু করেছি। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বীমা গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে ‘স্টেট-অব-দ্য-আর্ট টেকনোলজি’ সম্পন্ন ‘ইউনিফাইড মেসেজিং প্লাটফর্ম (ইউএমপি)’ পদ্ধতি চালু করেছি, যা গ্রাহকদের আস্থা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।” এ সময় বীমা কোম্পানির প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ানোর বিষয়ে তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।

বীমার উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণ বীমা করপোরেশন ও জীবন বীমা করপোরেশনকে পেশাদারিত্ব এবং প্রযুক্তিগতভাবে আরও সক্ষম করতে বীমা প্রতিষ্ঠানকে অটোমেশন পদ্ধতির আওতায় আনা এবং এ জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি।’

pm-1

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গাড়ি যারা ব্যবহার করে তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গাড়ির ইন্স্যুরেন্স সঠিকভাবে করেনি। থার্ড পার্টি ইন্স্যুরেন্স, সামান্য কিছু টাকা দিলেই সার্টিফিকেটটা পেয়ে যায় এবং গাড়ি চালাতে পারে। কিন্তু যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন কিন্তু আর কিছুই পায় না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারো গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে সে যে টাকা পেতে পারে বা ইন্স্যুরেন্সের টাকায় গাড়ি মেরামত করাতে পারে, সে বিষয়টা মানুষকে আরও ব্যাপকভাবে জানানো দরকার।’

তিনি বলেন, ‘কেউ যদি আপনাকে পেছন থেকে ধাক্কা মারে, তাহলে তার ইন্স্যুরেন্স থেকেই আপনার জরিমানার টাকা পাওয়া দরকার। যদিও এই সিস্টেমটা আমাদের দেশে এখনও শক্তিশালীভাবে গড়ে ওঠেনি। আমি মনে করি, এটা গড়ে ওঠা দরকার।’

বীমা কোম্পানির উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনাদের যারা পর্যবেক্ষক হবেন বা ঘটনার ইন্সপেকশনে (তদন্ত) যারা যাবেন তাদের ভালো ট্রেনিংপ্রাপ্ত এবং সৎ লোক হতে হবে।’

বীমা করে অর্থ উপার্জন এক সময় মধ্যবিত্ত এবং চাকরিপ্রত্যাশীদের ভালো উপার্জনের একটি পথ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা এখন আর তেমনভাবে নেই। আমি মনে করি এটা আবার ফিরে আসা উচিত।’

pm-2

বেকার সমস্যা অনেকাংশেই লাঘব হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বীমা কোম্পানির মালিক যারা রয়েছেন, তারা যদি এজেন্ট হিসেবে কাজ দেন তাহলে অনেক যুবক এবং বিশেষ করে মেয়েরা কাজ করতে পারে। ফলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং বেকারত্ব দূর হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির (আইডিআরএ) ‘বীমা ম্যানুয়াল’ এবং ‘বীমা নির্দেশিকা’ নামক দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।

দেশের বীমা খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম এবং আইডিআর’র চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।

এছাড়া বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) প্রেসিডেন্ট শেখ কবির হোসেন, বিশিষ্ট ইন্স্যুরেন্স ব্যক্তিত্ব বেগম ফরিদুর নাহার লাইলি এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের (বিআইএফ) প্রেসিডেন্ট বিএম ইউসুফ আলী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন।

এফএইচএস/এফআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।