নোয়াখালীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমার কারিগররা
নোয়াখালীতে এবারো শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে চলছে ব্যাপক আয়োজন। আর কয়েকদিন পরই প্রতিমাগুলো যার যার মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হবে। তাই শেষ মুহূর্তে প্রতিমার কারিগরা এখন দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিমা তৈরি করা হয় চৌমুহনীতে।
যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকার কারণে প্রতি বছর চৌমুহনীর শ্রী শ্রী রাধামাধব জিউর মন্দির ও শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর আশ্রমে চলে বেশির ভাগ মণ্ডপের প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রায় এক থেকে দেড় মাস ধরে নীরবে চলে এখানে প্রতিমা কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় বিভিন্ন দেব-দেবির অবয়ব তৈরি। খড়, বাঁশ মাটিসহ বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে তৈরি হয় এক একটি প্রতিমা।
প্রায় সবকটি প্রতিমার এখন মূল অবয়ব তৈরি হলেও শেষ মুহূর্তে তা ফিনিশিং দেয়া হচ্ছে। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে এগুলো রোদে শুকিয়ে দেয়া হবে রং। তারপর চলবে সাজসজ্জা। আর তাই এ প্রতিমা তৈরির কারগিরদের এখন বিশ্রাম নেয়ার সময় নেই। পূজার সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই তাদের ব্যস্ততা বাড়ছে। মাথায় এখন একটাই চিন্তা সময় মতো দিতে হবে প্রতিমার ডেলিভারি।
চৌমুহনী রাধামাধব জিউর মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির দ্বিতীয় দাফে চলছে এখন রং দেয়ার কাজ। এখানে কথা হয় প্রধান কারিগর অমল পালের সহকারীদের সঙ্গে। চারজন কারিগর সমানতালে কাজ করে যাচ্ছেন। একজন রং তৈরি করছেন। আর তিনজন প্রতিমার গায়ে রং লাগাচ্ছেন। কাজের ফাঁকে কথা হয় এক কারিগরের সঙ্গে।
তিনি জানান, গত দেড় মাস থেকে দিন-রাত পরিশ্রম করে প্রতিমাগুলোর মূল অবয়ব তৈরি করা হয়েছে। এর রোদে শুকিয়ে নেয়া হযেছে। আর এখন চলছে রংয়ের কাজ। কয়েক স্তরে রং লাগানোর পর আবার স্প্রে করে দেয়া হবে শেষ রংয়ের প্রলেপ। তার পর চলবে সাজ সজ্জার কাজ। যা আরো দুই তিন দিন পর শুরু হবে। সাজ সজ্জার পরেই প্রতিমাগুলো চলে যাবে যার যার মণ্ডপে। সব মিলে তারা এখানে ৭ সেট অর্থাৎ ৪৯টি প্রতিমা তৈরি করছেন।
তার পাশেই প্রায় ৩‘শ গজ দূরে শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর আশ্রম কেন্দ্রেও চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। প্রতি বছরের ন্যায় এবার শরীয়তপুর থেকে আসা প্রতিমার কারিগররা নিপুন হাঁতের ছোঁয়ায় তৈরি করেছেন দুর্গা, গনেশ, অসুরসহ নানা রকেমর দেব-দেবির প্রতিমা। তবে তারা একটু পিছিয়ে থাকলেও কারিগরা রতন পাল জানান, সময় মতো সব প্রতিমা তৈরি করা সম্পন্ন হবে। দিনে রাতে কাজ করে তা শেষ করতে হবে।
শুধু যে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরি করা তা নয়। এবার নিজেদের সেরা করে তোলার লক্ষ্যে খোদ বাড়ি প্রাঙ্গনে মঙ্গলা পুজা কমিটির উদ্যোগে সিমেন্ট দিয়ে ২০ ফুটের মহাদেবের প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। এভাবে অনেকে পূজা কমিটি প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরির কাজে ব্যস্ত। যা শেষ করতে আরো ১০ থেকে ১২ দিন লেগে যাবে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি বাবু বিনয় কিশোর রায়ে জাগো নিউজকে জানান, এবার জেলায় মোট ১৫৩টি মণ্ডপে পূজা আয়োজন করা হয়েছে এরএর মধ্যে বেগমগঞ্জে ২১টি, সোনাইমুড়িতে ১০টি, চাটখিলে ৯টি, সেনবাগে ১২টি, কোম্পানীগঞ্জে ১২টি, কবিরহাটে ১৬টি, সুবর্নচরে ২৫টি, হাতিয়ায় ৩১টি এবং সদরে ১৭টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
মিজানুর রহমান/বিএ