স্বাচিপ সম্মেলন : বাজেট দুই কোটি, অতিথি ১০ হাজার
দীর্ঘ এক যুগ পর আগামী ১৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-এর সম্মেলনকে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। আসন্ন এ সম্মেলনে প্রায় ১০ হাজার জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত থাকবেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে ভ্রাতৃপ্রতীম মূল সংগঠন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ নেতা, বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় স্বাচিপের বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক নেতাকর্মী, বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীদের দাওয়াত দেয়া হবে।
অনেক বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনকে সামনে রেখে স্বাচিপের সকল পর্যায়ের ঝিমিয়েপড়া নেতাকর্মীরা এখন অনেকটাই উজ্জীবিত। এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত করা না হলেও সম্মেলনের আনুমানিক বাজেট ধরা হয়েছে দুই কোটি টাকা।
মঙ্গলবার দুপুরে সম্মেলন প্রস্তুতি মূল কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন সাব কমিটির সদস্যদের এক বৈঠক রাজধানীর তোপখানা রোডের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মোট ১১টি সাব কমিটির ওপর অর্পিত দায়িত্বের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা হয়।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির কো-চেয়ারম্যান হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া জাগোা নিউজকে জানান, দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনকে সামনে রেখে স্বাচিপের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ভীষণ খুশি ও আনন্দিত। সুষ্ঠু, সুন্দর ও সফল একটি সম্মেলন নেত্রীকে (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা) উপহার দেয়াই আমাদের মূল টার্গেট।
স্বাচিপের নেতাকর্মীরা সব ভেদাভেদ ভুলে সম্মেলনকে সফল করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্মেলনে স্বাচিপ নেতাকর্মী, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ মোট ১০ হাজার অতিথি উপস্থিত থাকবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জাঁকজমকপূর্ণ ও সর্বাত্মকভাবে সফল করতে প্রস্তুতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের ভেন্যুটিকে আলোকসজ্জিতকরণসহ রংবেরংয়ের বেলুন, পোস্টার দিয়ে সাজানো হবে। তারা জানান, সম্মেলনে দুটি পর্ব থাকবে। উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মেলনে উপস্থিত থেকে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিশেষ অতিথিত হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সারাদেশের স্বাচিপের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।
অন্যান্য অনুষ্ঠানের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী যদি সভাপতি ও মহাসচিব নিজে নির্বাচিত করে দেন তবে দ্বিতীয় অধিবেশনে তেমন কিছুর আয়োজন থাকবে না। তবে তিনি যদি নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব বাছাইয়ের নির্দেশনা দেন তবে দ্বিতীয় অধিবেশন থাকবে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে জমজমাট। সেদিন যতো রাতই হউক নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলবে। এছাড়া বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্র আয়োজন থাকবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈঠকে স্বাচিপের একজন নেতা জানান, সম্মেলনের ব্যয় নির্বাহের অর্থ জোগাড় করতে সাবেক ও বর্তমান দুই স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এক উপদেষ্টা, আওয়ামী লীগ ও বিএমএর সাবেক এক শীর্ষ এক চিকিৎসক নেতা, বিএসএমএমইউয়ের সাবেক এক ভিসি ও একজন ডিনসহ মোট সাতজনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। মূলত সম্মেলন উপলক্ষে একটি সুভেনিয়র প্রকাশের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সংগ্রহের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের টার্গেট করা হয়েছে।
সম্মেলনের নামে যেন গণচাঁদাবাজি না হয় সে জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সাতজনের বাইরে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান সংগ্রহ না করতে স্বাচিপ নেতা ও সাধারণ সদস্যদের প্রতি নির্দেশনা জারির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় স্বাচিপের একাধিক শীর্ষ দায়িত্বশীল কর্মকতা এমন মন্তব্য করেন।
আজকের প্রস্তুতি কমিটির বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে স্বাচিপ সভাপতি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, বিএমএর যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল আজিজ, স্বাচিপের যুগ্ম মহাসচিব ডা. জামালউদ্দিন চৌধুরী, বিএমএর ঢাকা মহানগরীর সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবদুর রউফ সর্দার, বিএমএ সিলেট জেলার সহ-সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী, বিএমএর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, বিএমএর আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. আবুল হাশেম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
## স্বাচিপের পরবর্তী সভাপতি ও মহাসচিব কারা?
এমইউ/বিএ