‘মাস্ক নেই’ বলে দাম ঠেকলো ১৭৫০ টাকায়
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫৫ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপের সময় কৃত্রিম সংকট তৈরি করে হঠাৎ বাড়ানো হয়েছিল ওডোমস মসকিটোর দাম। এবার চীনে নভেল করোনাভাইরাসের খবরে মানুষের মাঝে হঠাৎ বেড়ে গিয়েছে মাস্কের ব্যবহার। সেই সুযোগে সংকটের কথা বলে আবারও একই কাজ করল ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা। ‘যোগান নেই অজুহাতে’ বেড়েছে মাউথ মাস্কের, অ্যান্টি ডাস্ট মাস্কের (সার্জিক্যাল মাস্ক) দাম।
সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মাস্ক। রাস্তায়, ফুটপাতে, বিভিন্ন অনলাইন শপে মাস্ক বিক্রি হলেও ফার্মেসিগুলোতে মাস্কের সংকট দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে মাস্কের ব্যবহার বেড়েছে গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের আকার ১৩৫ ন্যানো, যা ভালোমানের মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। এ কারণে বাংলাদেশেও বেড়েছে এর চাহিদা।
বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত চাহিদার কারণে মাস্কের সংকট দেখা দিয়েছে, এই সুযোগে অনেকেই বেশি দামে মাস্ক বিক্রি করছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারের মানসম্মত সব মাস্ক চীন থেকে আমদানি করা হয়। শুনেছি বর্তমানে চীন নিজেদেরই চাহিদা মেটাতে পারছে না । এ কারণে বাংলাদেশেও এই মাস্কের আমদানি কমেছে। একই অবস্থান অনলাইনের কেনাকাটার ওয়েবসাইট ও পেজগুলোতে।
সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি ফার্মেসি ও অনলাইন শপিং ওয়েবে গিয়ে দেখা গেছে, ডিস্পোজেবল নন ওভেন ফ্যাব্রিক মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়, কটন মাস্ক ১২০ টাকা, স্পঞ্জ অ্যান্টি ডাস্ট মাস্ক ৫০ টাকা, এন-৯৫ (৮২১০) মাস্ক ২৫০ টাকা, এন-৯৫ (৮১১০এস) ১৮০ টাকা, পিএম-২.৫ মাউথ মাস্ক ১২০ টাকা, সাওমি এয়ারপপ থ্রি-সিক্সটি ডিগ্রি অ্যান্টি ফগ মাস্ক ৩৫০ টাকা, সাওমি স্মার্টলি ফিল্টার মাস্ক ৪৫০ টাকা এবং সাওমি পিএম-২.৫ লাইট ওয়েট মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ১৭৫০ টাকা।
১৭৫০ টাকার সর্বোচ্চ দামের মাস্কটি বিক্রি করছে বিডি শপ ডট কম নামের একটি অনলাইন শপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের এক বিক্রয় প্রতিনিধি জাগো নিউজক বলেন, আমাদের এই মাস্কটির প্রচুর চাহিদা ও স্টক রয়েছে। ঢাকার যে কোনো গ্রাহক অনলাইনে অর্ডার করলে দু-দিনের মধ্যে মাস্ক ডেলিভারি পেয়ে যাবেন।
রাজধানীর তোপখানা রোডে কয়েকটি সার্জিক্যাল মাস্কের পাইকারি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৫ দিনে তাদের মাস্ক বিক্রি বেড়েছে ৬-৭ গুণ।
রকিবুল ইসলাম নামে জাহান ফার্মার একজন বিক্রয় কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এখান থেকে সাধারণত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক এবং মেডিকেল শিক্ষার্থীরা ওয়ানটাইম সার্জিক্যাল মাস্ক কিনে থাকেন। তবে বর্তমানে সব শ্রেণিপেশার মানুষ এই বক্স কিনছেন। এক বক্সে ৫০টি সার্জিক্যাল মাস্ক থাকে। আগে আমরা দিনে ২-৩ বক্স সার্জিক্যাল মাস্ক বিক্রি করতাম। এখন প্রতিদিন ২০-২৫টি বক্স বিক্রি করি। চাহিদার চাইতে যোগান অনেক কম। ২-৩ দিন পরপর মাস্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে। অনেকে ফোনে ৩-৪ দিন আগ থেকে মাস্কের অগ্রিম অর্ডার দিয়ে রাখছেন। তাই দাম একটু বাড়তি।
জামাল নামে গুলশান ফার্মেসির বিক্রয় কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, সপ্তাহখানেক হয়েছে মাস্ক শেষ হয়ে গেছে। সাত দিন ধরে মাস্ক আসছে না।
লাজ ফার্মার বকশিবাজার শাখার বিক্রয় কর্মকর্তা মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা ৮৫ টাকা দরে চীনের উন্নত মাস্ক বিক্রি করতাম। ২-৩ দিন আগে শেষ হয়ে গেছে। কবে আসবে তা জানা নাই। বেশিরভাগ ব্রাঞ্চেই মাস্ক শেষ হয়ে গেছে বলে শুনেছি।
এদিকে আগে ফুটপাতে বা বাসে হকাররা কাপড়ের যেসব মাস্ক ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি করতো এগুলো বর্তমানে ২০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ফার্মেসি বিক্রেতারা বলছেন, এগুলো মাস্ক নিম্নমানের, এসবে দূষিত বাতাস ফিল্টার হয় না।
এআর/জেএইচ/এমএস