সড়কে খানাখন্দ, ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন


প্রকাশিত: ০৯:৫১ এএম, ০৬ অক্টোবর ২০১৫

কার্পেটিং, ইট, বালু ও খোয়া উঠে গিয়ে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে গোড়াই-সখিপুর সড়ক। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত হয়ে ছোট ছোট পুকুরে পরিণত হয়েছে। ফলে বেহাল এই সড়ক দিয়ে যানবাহনগুলো অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বলে জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই থেকে সখিপুর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এই সড়কটি টাঙ্গাইলের পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। মির্জাপুর উপজেলা ছাড়াও সখিপুর, কালিহাতি, ঘাটাইল এবং মধুপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের বিরাট এলাকার জনগণ এবং মালামাল পরিবহনে ঢাকা ও টাঙ্গাইলের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। এই আঞ্চলিক সড়কটি দিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার ছোট বড় যানবাহন চলাচল করছে বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র আরো জানান, এই ব্যাপক সংখ্যক যানবাহন চলাচল এবং বৃষ্টির কারণে ইট, বালু, খোয়া ও বিটুমিন উঠে গিয়ে খানাখন্দকে পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্তেও সৃষ্টি হয়ে পুকুরে পরিণত হয়েছে। ফলে বিপুল সংখ্যক যানবাহন অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে বলে জানা গেছে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাইফুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, আজিজুল ইসলাম, ইলিয়াস আলী, বাসচালক রহিম বাদশা, আব্দুল আলীম, ট্রাক চালক আনোয়ার হোসেন, রাজ্জাক মিয়াসহ অনেকেই জানান, গোড়াই থেকে সখিপুর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় যেতে যেখানে বড়জোড় ৪৫/৫০ মিনিট সময় লাগার কথা সেখানে সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে বর্তমানে সময় লাগছে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা।

তারা আরো জানান, রাস্তার এই বেহাল অবস্থার দরুণ তাদের যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে পড়ে। তাছাড়া যে কোনো সময় এই সড়কে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।

এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক বিএসসি, লাল মিয়া, ইয়াকুব আলী, জসিম খান, আব্দুস সামাদ, আজাহারুল ইসলাম, হালিম সিকদার, নুরু মিয়া জানান, সড়কটির দুরাস্থার কারণে যাত্রীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চলের বেগুন চাষিরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ঢাকা থেকে পাইকার না আসায় তারা কম দামে বেগুন বিক্রি করছেন বলে কৃষক হালিম, আলমগীর, ফেরদৌস পাহাড়ী, ফরহাদ হোসেন জানান। তারা দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

হাটুভাঙা ব্রিজের ইজারাদার মো. আতিকুল ইসলাম শিকদার বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে পাহাড়ি অঞ্চল থেকে বাঁশ ও কাঠের ট্রাকসহ মাল ভর্তি যানবাহন নলুয়া, বাসাইল, সখিপুরের বড়ডোবা হয়ে গাজীপুর দিয়ে বেরিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছে। যানবাহনগুলো এই সড়কে চলাচল না করায় ইজারাদাররা বিপাকে পড়েছেন। প্রতিদিন যেখানে ৩০/৩৫ হাজার টাকা কালেকশন হতো যানবাহন চলাচল কমে যাওয়ায় প্রতিদিন ৪/৫ হাজার টাকা কালেকশন হচ্ছে। তাছাড়া যে টাকায় ইজারা নিয়েছেন তার অর্ধেক টাকাও তুলতে পারবেন না বলে তিনি জানান।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের মির্জাপুরের সহকারী প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভারী যানবাহন চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সড়কটির এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া গোড়াই এলাকায় মিল কারখানাগুলোর পানিও সড়কে জমে থাকায় কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি আরো বলেন, দু’একদিনের মধ্যে বড় বড় গর্ত ভরাটের কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া ২৭ কিলোমিটার এই সড়কটি সংস্কারের জন্য ১১ কোটি ২৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।