রাজন হত্যা : কামরুলকে আনতে সৌদি যাচ্ছেন ৩ পুলিশ
সিলেটে নির্মম নির্যাতনে নিহত শিশু শেখ সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলামকে ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরব যাচ্ছেন তিন পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ সদর দফতরের এক কর্মকর্তার নেতৃত্বে সিলেট মহানগর পুলিশের দুই সদস্য এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে সৌদি আরব যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ তিন পুলিশ সদস্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে কামরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনবেন।
রাজনকে হত্যার পরপরই সৌদি আরব পালিয়ে যান প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম। তাকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতার অভিযোগ উঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। বর্তমানে রিয়াদে আটক অবস্থায় রয়েছেন কামরুল। সৌদি সরকারও তাকে ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে পুলিশের তিন সদস্যকে সৌদি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশ সদর দফতর।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সদর দফতর) মাহবুবুল করিমের নেতৃত্বে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আ ফ ম নিজাম উদ্দিনকে সৌদি আরব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
সৌদি আরর যাওয়া-আসা বাবদ প্রায় চার লাখ টাকা মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ হয়েছে বলেও জানিয়েছে এই সূত্র। ইতোমধ্যে রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাস ও সৌদি কর্তৃপক্ষের কাছে কামরুলকে ফেরানোর সমস্ত কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান এক পুলিশ কর্মকর্তা।
সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশিদের সহযোগিতায় জেদ্দায় কামরুলকে আটকের পর বর্তমানে তিনি রিয়াদে ইন্টারপোলের হেফাজতে রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি মিডিয়া) রহমত উল্লাহ বলেন, সৌদি যাওয়ার একটা প্রক্রিয়া চলছে। তবে সরকার থেকে এখনো নির্দেশনা আসেনি।
গত ৮ জুলাই সিলেট শহরতলির কুমারগাওয়ে চোর অপবাদ দিয়ে পৈশাচিক কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের শিশু সামিউল আলম রাজনকে। নির্যাতনের দৃশ্য নিজেরাই ভিডিওচিত্রে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন ঘাতকরা। ওই ভিডিও দেখে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
আলোচিত এ হত্যা মামলার বর্তমানে সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। মোট ৩৮ জন সাক্ষির মধ্যে ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সৌদি আরবে পলাতক কামরুল ইসলামসহ ১৩ জনকে আসামি করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মামলাটির অভিযোগ গঠন করা হয়। এদের মধ্যে ১০ জন আটক রয়েছেন। কামরুলসহ তিনজন এখনো পলাতক রয়েছেন।
কারাবন্দি থাকা ১০ আসামির মধ্যে আটজনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রত্যেকেই রাজনকে হত্যার জন্য কামরুলকে দায়ী করেছেন। কামরুলের নির্দেশেই তারা রাজনকে নির্যাতনে অংশ নেন বলে সাক্ষ্য দেন অভিযুক্তরা।
ছামির মাহমুদ/এমজেড/এমএস