আশকোনা ক্যাম্পে অর্ধশত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর নির্ঘুম রাত
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ১১:৫৯ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চীনের ওয়ান প্রদেশ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ বিমানে নিয়ে আসা ৩৪১ জন বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনা হজ ক্যাম্পে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর ও সেনাবাহিনীর মেডিকেল কোরের অর্ধশতাধিক সদস্য।
শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টায় বিমানের বিশেষ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছবে। চীন থেকে ফেরত সকল যাত্রীদের বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সারারাত জেগে থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবার সকল ব্যবস্থা করবেন।
হজ মৌসুম ছাড়া প্রায় সারা বছর রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্প বলতে গেলে জনমানবহীন শূন্য থাকে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন এ প্রতিষ্ঠানটিতে সন্ধ্যার পর হাতেগোনা কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়া কেউ থাকেন না। সন্ধ্যার পরপরই সুনসান নীরবতা বিরাজ করে। কিন্তু শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনেও আশকোনা হাজ ক্যাম্প দিনে ও রাতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, স্বাস্থ্য মহাপরিচালকসহ অন্যান্য পরিচালকদের উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল।
আশকোনা হজ ক্যাম্পে কর্তব্যরত স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোস্তাক হোসেন রাত ১১টায় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, চীন থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রত্যেককেই বহনকারী বিমানের ভেতরে হ্যান্ড হেলথ ডিজিটাল থার্মোমিটারের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। আগে থেকেই তাদের কাছে হেলথ কার্ড প্রদানের মাধ্যমে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে।
তিনি আরও জানান, যাত্রীদের মধ্যে কারো ১০০ বা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপর জ্বর থাকলে তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার জন্য সরকারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। আর যাদের জ্বর বা অন্য কোনো উপসর্গ থাকবে না তাদেরকে আশকোনা হজ ক্যাম্পে নিয়ে এসে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হবে।
জানা গেছে, বিশেষ বিমানে চীন থেকে ফেরত আসা যাত্রীদের মধ্যে ৩০০ জন পুরুষ ও ৪১ জন নারী ও শিশু রয়েছে। আশকোনা হজ ক্যাম্পে পুরুষদের জন্য ৫টি ওয়ার্ড ও নারীদের জন্য ১টি ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা সম্পূর্ণ সুস্থ তাদেরকে এ ৬টি ওয়ার্ডে রাখা হবে।
এছাড়া যারা সামান্য জ্বর বা অন্যান্য অসুস্থতায় ভুগছেন তাদের জন্য একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিশেষ বিমানে যাত্রীদের নিয়ে আসতে তিনজন চিকিৎসকও চীন গিয়েছেন।
এমইউ/আরএস