কাজে থাকতে মেধা-যোগ্যতা দিয়ে দেশটাকে এগিয়ে দিয়ে গেল না কেন?
সাবেক সচিবদের নতুন সংগঠন করার উদ্যোগ নেয়ার প্রসঙ্গে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন, অবসরে যাওয়ার আগে সচিবদের কাজে (দায়িত্ব) থাকতে তাদের মেধা-যোগ্যতা দিয়ে চাকরি করে এতদিন দেশটাকে এগিয়ে দিয়ে গেল না কেন?
সাবেক সচিবদের সংগঠন এবং লব্ধজ্ঞান দেশের কাজে লাগানোর প্রসঙ্গ এলে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান-সুপ্রর আয়োজনে ‘তামাক কোম্পানি থেকে সরকারের শেয়ার প্রত্যাহারে করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।
সচিবালয়ের নাম এখনও মন্ত্রণালয় করতে পারেনি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নেতৃত্ব আর কর্তৃত্ব যদি কোনো ব্যক্তির হাতে না থাকে, তাহলে কিন্তু তার কোনো দাম নেই। সুতরাং এমপিরা চাইলেই একটা কাজ করতে পারেন-এটা সঠিক ভাবা ঠিক না। এমপিদের কিন্তু বাইন্ডিংয়ের মধ্যে থাকতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘আজকে একটা পত্রিকায় দেখলাম সচিবরা একটি সংগঠন করছেন। বিষয়টা হলো তারা ক্ষমতা ছাড়তে চাচ্ছেন না।’ এ সময় অপর এক আলোচক পাশ থেকে বলেন, ‘তাদের লব্দজ্ঞান, মেধা দেশের কাজে লাগাতে চায়।’ এতে ডেপুর্টি স্পিকার পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘কাজে থাকতে (দায়িত্ব) তাদের মেধা, যোগ্যতা দিয়ে এতদিন চাকরি করে দেশটাকে এগিয়ে দিয়ে গেল না কেন?’
একটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়, নিজেদের লব্ধ অভিজ্ঞতা দেশের ও জনগণের জন্য ইতিবাচক কাজে লাগানোর চিন্তা করছেন সাবেক সচিবরা। একটি সংগঠনের মাধ্যমে এই উদ্যোগ নেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে সাবেক সচিবদের মধ্যে যারা বর্তমানে রাষ্ট্রীয় ও সরকারি বিভিন্ন পদে যুক্ত আছেন, তাদের এই সংগঠনে যুক্ত না করার চিন্তা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, দেশে বতর্মানে কম-বেশি পাঁচশোর মতো সাবেক সচিব আছেন। তাদের কেউ কেউ বলছেন, বিয়াম ফাউন্ডেশনে সাবেক সচিবদের নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছে। শুধু কার্যকর হয়নি।
প্রস্তাবিত সংগঠনটির নাম এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। সংগঠনটির গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আগে গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হবে, এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
জানা গেছে, স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন হলে সেখানে সরকারি কর্মচারীরা যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা, সরকারি নীতি-নির্ধারণীতে সহযোগিতার জন্য চুক্তিতে থাকা সচিবরা সঙ্গত কারণে এখানে যুক্ত থাকতে পারেন না। এ কারণে সচিব থেকে অবসরে যাওয়ার পরও যারা রাষ্ট্রীয় ও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যুক্ত আছেন, তাদের এ সংগঠনে রাখা হচ্ছে না। আরও জানা গেছে, এই সংগঠনের রাজনৈতিক কোনো মতাদর্শ থাকবে না।
গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির সম্মেলনকক্ষে সাবেক প্রায় অর্ধশত সচিবের পুনর্মিলনীতে এমন একটি সংগঠন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুনর্মিলনীতে সবার সিনিয়র হিসেবে সভাপতিত্ব করেন ৭৩তম ব্যাচের সচিব শৈলেন্দ্রনাথ মজুমদার। এতে সাবেক সচিব ও বর্তমানে রাষ্ট্রীয় এবং সরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরাও ছিলেন।
সাবেক সচিবদের সংগঠনের বিষয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক হিসেবে আছেন নজরুল ইসলাম। সদস্য সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সংগঠনটি করার মূল উদ্যোক্তা প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।
এফএইচ/এসআর/এমকেএইচ