চীন থেকে দেশে ফিরতে আগ্রহীদের নিবন্ধন শুরু

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:১৩ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২০

চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সেখান থেকে ফিরে আসতে আগ্রহী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে। এই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে কতজন আসবেন তা নির্দিষ্ট হওয়ার পর সেখানে পাঠানোর জন্য বিমান নির্ধারণ করবে সরকার। তবে আগ্রহীদের দেশে ফেরানোর এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত চীনে যারা আছেন, তাদের সেখানকার সরকারের স্বাস্থ্যবিষয়ক নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজে এ বার্তা দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। চীন থেকে আগ্রহী বাংলাদেশিদের ফেরানোর সবশেষ আপডেট ও করণীয় জানিয়ে বার্তাটি দেন তিনি।

এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকা চীনের উহানে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের ফেরাতে প্রয়োজনে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে চীন সরকারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। পরে চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের কারণে চীন থেকে বাংলাদেশিদের ফিরতে আরও ১৪ দিন লাগবে। ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধের লক্ষ্যে ১৪ দিন পর্যন্ত উহানে কাউকে প্রবেশ করতে দেবে না স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশিদের ফেরানোর প্রক্রিয়ার আপডেট জানিয়ে বার্তায় বলেন, “SARS ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে ‘জিন সিকুয়েন্স’ থেকে মানবদেহে পরীক্ষা করতে সময় লেগেছিল ২০ মাস। CORONA ভাইরাসের ‘জিন সিকুয়েন্স’ ইতোমধ্যে করে ফেলেছেন চীনের বিজ্ঞানীরা (রয়টার্স)। ভ্যাকসিন তৈরি করে তা মানবদেহে পরীক্ষা করতে সর্বোচ্চ সময় লাগবে তিন মাস, যার মধ্যে এক মাস প্রায় পার হয়েছে। ভাইরাসটি ছড়ানোর পর চীন এ সম্ভাব্য ঝুঁকির জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে, যার প্রভাব আমরা দেখছি সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থায়।”

শাহরিয়ার আলম বলেন, “এই কথাগুলো তাদের জন্য, যারা খুব শঙ্কার মধ্যে আছেন চীনে। ঘরের মধ্যেই একনাগাড়ে থাকতে বলাটাই একধরনের ‘কোয়ারেন্টাইন’ ব্যবস্থা। ১৪ দিন সর্বোচ্চ, যার মধ্যে কম-বেশি সাত দিন পার হয়ে গেছে।”

“কী ধরনের বিমান আমরা পাঠাব তা জানতে চেয়েছে চীন। যারা ফিরতে চান তাদের রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। আমরা দু-একদিনের মধ্যেই সঠিক ধারণক্ষমতার বিমানটি নির্ধারণ করতে পারবো ফিরে আসতে চাওয়া মানুষের সংখ্যার মাধ্যমে। আমি অনুরোধ করবো যে কয়েকটা দিন ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে, সেই সময় পর্যন্ত চীন সরকারের প্রতিটি নির্দেশনা কোনো ব্যতিক্রম ছাড়া মেনে চলার জন্য। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু নিজের জীবনের স্বার্থে এবং ভাইরাসটি যেন তাদের কারও মাধ্যমে না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে চীনের স্বাস্থ্যবিষয়ক নির্দেশনাগুলো মেনে চলতেই হবে।”

শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমি আরও অনুরোধ করবো বাংলাদেশে থাকা তাদের পরিবারের সদস্যদের যেন চীনে থাকা তাদের আত্মীয়দের তারা এই বার্তাটি পৌঁছে দেন এবং তাদের উদ্বুদ্ধ করেন। আমাদের দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা তাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন এবং অতিপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করছেন। আমরা ঢাকা থেকে দূতাবাসের কার্যক্রমের সাথে সমন্বয় করছি এবং তদারকি করছি।”

এদিকে ডিসেম্বর থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে চীনে। সরকারি হিসাবে, আক্রান্ত হয়েছে আরও চার হাজার ১৯৩ জন।

চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। মূলত চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।

পরে অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, জার্মানি, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রেও এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বিদেশে ছড়ানোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, চীনে সফর করেছেন এমন লোকজনের মাধ্যমেই ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে। সে কারণে অনেক দেশই এ ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন গমনাগমনে নাগরিকদের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে।

এইচএ/এমএস

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।