আমদানি হয়েছে সোয়া ৩ লাখ টন পেঁয়াজ
সংকট মোকাবিলায় চলতি অর্থবছর (৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত) বিদেশ থেকে সোয়া তিন লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বর্তমানে আমদানিকৃত পেঁয়াজ ও নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করায় পেঁয়াজের মূল্য কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে দুটি পৃথক প্রশ্নের লিখিত জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
টিপু মুনশি জানান, বাংলাদেশে পেঁয়াজ একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য। বাংলাদেশে বর্তমানে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ টন। গত (২০১৮-১৯) অর্থবছর পেঁয়াজের উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৩ লাখ ৩০ হাজার টন। তবে এর মধ্যে শতকরা ৩৩ ভাগ সংগ্রহকালীন এবং সংরক্ষণকালীন ক্ষতি বাদ দিলে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৬ দশমিক ৩১ লাখ টন।
তিনি জানান, উৎপাদিত পেঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট না হওয়ায় বিদেশ থেকে বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যা এবং অতিবৃষ্টি হওয়ার প্রেক্ষিতে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের দর বেড়ে যায়। ফলে ভারত সরকার গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ পেঁয়াজের টন প্রতি ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ভারতের স্থানীয় বাজারে অস্বাভাবিক হারে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে দেশটির সরকার পেঁয়াজের রফতানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের পেঁয়াজের বাজারে ক্রম ঊর্ধ্বগতি পরিলক্ষিত হয়। উৎপাদিত পেঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট না হওয়ায় বিদেশ থেকে বিশেষ করে ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, মিসর, তুরস্ক, চীন, ইউক্রেন এবং নেদারল্যান্ডস থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে দেশীয় চাহিদা মেটানো হয়।
তিনি জানান, দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ভবিষ্যতে পেঁয়াজের আমদানি ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সম্প্রতি পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি, এর গুদামজাতকরণ এবং উৎপাদিত পেঁয়াজের বাজারমূল্য স্থিতিশীলের জন্য কৃষিমন্ত্রীকে একটি আধা সরকারি পত্র দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী জানান, ১৯৮৬-৮৭ অর্থবছরে বাংলাদেশের রফতানি ছিল মাত্র ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সামান্য ওপরে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে রফতানি আয় হয়েছে ৪৬ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি জানান, পণ্যভিত্তিক রফতানি আয় বিবেচনায় যদিও ৮৪ ভাগ তৈরি পোশাক থেকে অর্জিত হয়েছে, তবুও রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণের ফলে গত অর্থবছরে বিশ্বের ২০২টি দেশে ৭৪৪ পণ্য রফতানি হয়েছে।
এইচএস/জেএইচ/এমকেএইচ