২৭৬ মণ্ডপে চলছে পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারেও দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। ১৯ অক্টোবরর থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে বেজে উঠবে ঢাক-ঢোল আর কাঁসার শব্দ। মন্দিরে মন্দিরে উচ্চারিত হবে চন্ডি পাঠ। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। এখন চলছে প্রতিমার গায়ে রং লাগানো ও পুজা মণ্ডপের প্যান্ডেল তৈরির কাজ।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র জানায়, এ বছর জেলার মোট ২৭৬ মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। ১২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে দেবী পক্ষ`র শুরু হলেও আগামী ১৯ অক্টোবর থেকে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। ২৩ অক্টোবর প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
এদিকে, মহা ব্যস্ত সময় পার করছেন কক্সবাজারের মৃৎ শিল্পীরা। কাঁদামাটির কাজ শেষ করে এখন প্রতিমায় রং, পোষাক তৈরি ও মণ্ডপ সাজানোর কাজ করছেন তারা। শিল্পীর নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় দেবী দুর্গার আগমনী সুর বেজে উঠেছে। পূজা মণ্ডপে দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও শিব, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্ত্তিক ও গণেশসহ অন্যান্য দেবদেবীর প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, পূজা, প্রতিমা ও সাজসজ্জ্বার জন্য বাজেট করে পুজা কমিটির নেতৃবৃন্দরা নেমে পড়েছে প্রস্তুতিতে। শহরের বেশ কয়েকটি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরি হলেও জেলার বিভিন্ন স্থানের বেশির ভাগ প্রতিমা প্রবীণ মৃৎশিল্পী নেপাল ভট্টাচার্য়ের তত্বাবধানের তৈরি হচ্ছে শহরের প্রধান সড়কস্থ সরস্বতী বাড়ি প্রাঙ্গণে।
জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, এবার জেলায় মোট ২৭৬ সরস্বতী এই পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভা-সদর উপজেলায় ৪০টি প্রতিমা ও ৩২টি ঘট, রামু উপজেলায় ১৮টি প্রতিমা ও ৯টি ঘট, চকরিয়া পৌরসভা-উপজেলায় ৪১টি প্রতিমা ও ৩৫টি ঘট, পেকুয়া উপজেলায় ১১টি প্রতিমা ও ৬টি ঘট, কুতুবদিয়া উপলাজেয় ১২টি প্রতিমা ও ২৭টি ঘট, মহেশখালী উপজেলায় একটি প্রতিমা ও ৩১টি ঘট, উখিয়া উপজেলায় পাঁচটি প্রতিমা ও আটটি ঘট এবং টেকনাফ উপজেলায় পাঁচটি প্রতিমা পূজার মণ্ডপ স্থাপিত হয়েছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাড. রণজিত দাশ জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর ১৬টি পূজা মণ্ডপ বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের হাসপাতাল সড়কস্থ বঙ্গ পাহাড়ে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে সর্ববৃহৎ প্রতিমা। এছাড়া এই পুজা মণ্ডেপে সর্বোচ্চ বাজেট ধরা হয়েছে আট লাখ ৬৭ হাজার টাকা। তাছাড়া ঘোনারপাড়া পুজা উদযাপন পরিষদের বাজেট ধরা হয়েছে সাত লাখ আর গোলদিঘীর পাড়স্থ ইঁন্দ্রসেন দুর্গাবাড়ির এবারের বাজেট প্রায় আট লাখ টাকা। শুধু বঙ্গ পাহাড়, ঘোনারপাড়া কিংবা ইঁন্দ্রসেন দুর্গাবাড়ি নয় শহরের প্রায় পুজা মণ্ডপেই যে যার মত সুন্দর প্রতিমা ও সাজসজ্জ্বা করতে বাজেট নিরুপণ করে কাজে নেমে পড়ছে।
অন্যদিকে, পূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং সুষ্ঠ, সুন্দর ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের মাধ্যমে যাতে পূজা পালান করা সম্ভব হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে ১ অক্টোবর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ বলেন, দুর্গোৎসবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যে সকল পূজা মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে সে সকল মণ্ডপে পুলিশি টহলও অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সায়ীদ আলমগীর/এআরএ/আরআইপি