এখনই ভোটার হতে পারছেন না বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী


প্রকাশিত: ০৬:২২ এএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৫

এখনই ভোটার হতে পারছেন না বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। এর আগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাদের ভোটার করার ঘোষণা দিলেও এখন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। প্রশাসনিক ও সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের পর তাদের ভোটার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাই সারা দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময়ও ভোটার হতে পারছেন না তারা।

এ কারণে এ বছর জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছেন না বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী। এতে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সেবা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। অথচ যারা ভারত চলে গেছেন তারা ইতোমধ্যেই সেই দেশের পরিচয়পত্র পেয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব আবুল কাশেম বলেন, ওইসব এলাকার প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ সংক্রান্ত গেজেট করা হবে। এরপর এলাকাগুলো সংশ্লিষ্ট সংসদীয় এলাকায় যুক্ত করে সীমানা পুনর্নির্ধারণের পরই এলাকাভিত্তিক তাদের ভোটার করা হবে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় না হওয়ায় ৬৮ বছর তাদের ভোটার করা যায়নি; কিন্তু গেল জুলাই মাসে দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় হওয়ায় এখন তাদের ভোটার করতে সমস্যা নেই।

দীর্ঘদিন পরিচয়বঞ্চিত এসব নাগরিকের পরিচয়পত্র দিতে হালনাগাদ ভোটার তালিকার কাজ শুরু হওয়ার আগে বিশেষ উদ্যোগও নেয়া হয়েছিল। হঠাৎ এ উদ্যোগ থেকে ইসি সরে আসায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের ভোটার হওয়ার বিষয়টি।

কর্মকর্তারা আরো জানান, ছিটমহলবাসীকে ভোটার করতে প্রশাসনিক ও সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন নেই; বরং ভোটার করার পর ধীরে সুস্থে প্রশাসনিক ও সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস করা যাবে। দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে হলেও দ্রুত ছিটমহলবাসীকে ভোটার করার কাজ শুরু করা প্রয়োজন। ভোটার হলে তাদের দুর্ভোগ যেমন কমবে, তেমনি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয়ও দিতে পারবে। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা পাওয়াও সহজ হবে।

ইসি সূত্র জানায়, ছিটমহলবাসীকে দ্রুত ভোটার করার পরিকল্পনার ফাইলটি এখন আর চলছে না। চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শেষ না করে তাদের ভোটার করার কাজ শুরু করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

কারণ হিসেবে বলেছে, ছিটমহলবাসীকে ভোটার করতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হবে। এতে অনেক জনবলের প্রয়োজন হবে। এ কারণে চলমান হালনাগাদ শেষে ছিটমহলবাসীকে ভোটার করার কাজ শুরু হবে। এছাড়া সরকারের প্রশাসনিক ও ইসির সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ করে ছিটমহলবাসীকে ভোটার করার কাজ শুরু করবে বলে তারা জানান। প্রশাসনিক ও সংসদীয় পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। ফলে এ বছরে ভোটার হতে পারছে না ছিটমহলবাসী।

জানা যায়, ১১১ ছিটের মধ্যে ১৯টি থেকে ৯৮৭ জন ভারতে চলে গেছেন। এর মধ্যে পঞ্চগড় জেলার ১০টি ছিটমহল, লালমনিরহাটের সাতটি ও কুড়িগ্রামের দুইটি ছিটের বাসিন্দা রয়েছেন। অপরদিকে, ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশি ৫১ ছিটমহলের কেউ বাংলাদেশে আসতে আগ্রহ দেখাননি। দুই দেশের স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী, দাশিয়ারছড়াসহ ভারতের ১১১টি ছিটমহল ১ অগাস্ট প্রথম প্রহর থেকে বাংলাদেশের ভূখন্ডের অংশ হয়েছে। একইভাবে ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারতের অংশ হয়ে গেছে।

এইচএস/এসকেডি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।