মেহেরপুরে কচু চাষিদের মুখে হাসি


প্রকাশিত: ০৬:০৩ এএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৫

মেহেরপুরের বাজারে সুস্বাদু আমন কচু খুচরা ২৭-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর কচুর দাম বেশি পেয়ে চাষিরা খুবই খুশি। এদিকে উৎপাদিত কচুর ক্ষেত কিনেও লাভবান হচ্ছেন এ জেলার কচু ব্যাবসায়ীরা।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেব মতে, এ বছর জেলায় ২ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে কচুর চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৩০৫ হেক্টর বেশি। মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর, বন্দর, চকশ্যামনগর, রাজাপুর, রাধাক্রান্তপুর, বামনপাড়া এবং মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর, সোনাপুর, ভবেরপাদড়া, আনন্দবাস জয়পুর ও বিশ্বনাথপুর এলাকায় মাঠের পর মাঠ আবাদ হয়েছে কচু। দেশের বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুরের কচুর চাহিদা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ জেলার চাষিরা কচুর ভালো ফলন ও বেশি দাম পাওয়ায় চাষিদের পাশাপাশি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগও খুশি।

মেহেরপুর সদর উপজেলার উজুলপুর গ্রামের কচু চাষি খোকন এ বছর সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে কচুর চাষ করেছেন। তিনি জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি বিঘা কচু চাষে তার প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কচু উঠা ও বিক্রি পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে তার আরো ৪ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। প্রতি বিঘা জমি থেকে তিনি কমপক্ষে একশ মণ করে কচু পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।

বর্তমান মেহেরপুর বাজারে পাইকারি ৭শ টাকা থেকে ৮শ টাকা মণ দরে কচু বিক্রি হচ্ছে। ৬ মাসের এ ফসলে প্রতি বিঘা জমি থেকে তার কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা করে লাভ হবে।

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের হামিদ মালিথা জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে আবাদকৃত প্রায় ৩শ বিঘা জমির কচু ৪০ হাজার টাকা বিঘা দরে চাষিদের নিকট থেকে কিনেছেন। প্রায় এক মাস ধরে কচু তোলা, বাছাই ও বিক্রির কাজ চলছে তার। বর্তমানে কচু তোলা ও বাছাই করার জন্য তার দেড়শ শ্রমিক কাজ করছে। তিনি কচু বিক্রি করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

একই গ্রামের সাইদুর রহমান সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মাঠে কেনা জমির কচু তোলার সময় জানান, তিনি প্রতি বিঘা জমির কচু কিনেছেন ৪০ হাজার টাকায়। কচু তুলে বিক্রি পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে তার আরো ১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তিনি প্রতি বিঘা জমি থেকে একশ মণ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত কচু পেয়েছেন। এ হিসেবে জেলার কচু চাষিদের পাশাপাশি তাদের মত ব্যবসায়ীরাও কচু থেকে ভাল লাভ পাচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া কচু চাষের জন্য উপযোগী। জেলার উৎপাদিত কচু সুস্বাদু বিধায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এ কচুর চাহিদা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এ জেলার চাষিদের পাশাপাশি কচুর ব্যবসা করে মধ্যস্বত্বভোগীরাও ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। চাষিরা যদি তাদের উৎপাদিত কচু নিজেরাই দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করতে পারতেন তবে তারা আরো বেশি লাভবান হতেন।

তিনি আরো বলেন, মেহেরপুরের মাটিতে লতিরাজ কচু চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং মাঠ দিবেসের ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।