আন্দোলনে পিছুটান দিয়েছে মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা!
চিকিৎসক নেতাদের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে পিছুটান দিয়েছে সরকারি মেডিকেল কলেজের হাজার হাজার শিক্ষার্থী!
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সরকারি মেডিকেল কলেজের জেষ্ঠ্য অধ্যাপক ও শিক্ষার্থীরা জাগো নিউজকে জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করলেও তারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও অ্যাপসসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে তারা মনে করেন ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র হয়তো গণহারে শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছায়নি কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা সত্যি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, বঞ্চিত মেধাবি শিক্ষার্থীদের সংহতি জানিয়ে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের উচ্চ মহলের নির্দেশে ও চিকিৎসক নেতাদের অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার কারণে শেষ পর্যন্ত আন্দোলনে পাশে থাকার অনুমতি পেলেও পুলিশের সঙ্গে বচসা, ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা, মারধোর খেয়েও অধিকার আদায় করার অনুমতি পাননি।
ফলে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের শুরুতে যেমনটা সক্রিয় ছিলেন এখন আর তেমনটি নেই। যৌক্তিক এ আন্দোলনে নামতে না পেরে অনেকে মর্মপীড়ায় ভুগছেন বলেও জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অধ্যাপক শুক্রবার জাগো নিউজকে জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করলেও ‘গণমানুষের বদ্ধমূল ধারণা এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।’
তারা আরো জানান, তুচ্ছ ঘটনায় মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর তদন্ত কমিটি গঠন করলেও হাজারও মেধাবীর ভাগ্য নির্ধারণের সঙ্গে জড়িত প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের বিষয়ে কোন তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি। তড়িঘড়ি করে গভীর রাতে ফল প্রকাশ করা হয়। এমন কার্যক্রম সরকারের ভাবমূর্তি অনেকটা ক্ষুন্ন হয়েছে।
তারা বলেন, অভিযোগ উঠার পর পরই নিরপেক্ষ একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা নৈতিক দায়িত্ব ছিল কর্তৃপক্ষের। তদন্ত কমিটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের স্বপক্ষে কার কাছে কী প্রমাণ রয়েছে তা জানতে চাইতে পারতো। সে রকম প্রমাণ না পেলে তদন্ত প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করলেই এ অবস্থার উদ্ভব হতো না বলে মনে করেন তারা।
বিএমএর একজন সেন্ট্রাল কাউন্সিলর ফেসবুকে সমালোচনা করে বলেন, ‘বিএমএ ঘুমে! একটা তদন্ত কমিটিও যদি করত, তবুও সান্ত্বনা পেতাম! ভাবছি আমি বিএমএ সেন্টাল কাউন্সিলর পদ থেকে পদত্যাগ করবো। নিজের কাছে ক্লিয়ার থাকাটাই মৌলিক সুখ।’
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল হান্নান বার বার বলছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস কিংবা কোনো প্রকার সুযোগ নিয়ে ভর্তির সুযোগের অভিযোগ গুজব, ভিত্তিহীন। গত ১৫, ১৭ ও ২২ সেপ্টেম্বর প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে র্যাব যে চক্রটিকে গ্রেফতার করেছে তাদের কাছ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রশ্নপত্রের সঙ্গে কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
এমইউ/জেডএইচ/এএইচ/পিআর