২১ দিন খোলা আকাশের নিচে ওরা
সরকারি চাকরিতে যোগদানের বসয়সীমা ৩৫ করাসহ চার দফা দাবিতে টানা ২১ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র কল্যাণ পরিষদের নেতাকর্মীরা। আন্দোলনে অংশ নেয়া নেতাকর্মীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত না খেয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতে বসে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। এতে কনকনে শীতে, ধুলাবালি ও না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন আন্দোলনকারীরা।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) আন্দোলনে অংশ নেয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র কল্যাণ পরিষদের নেতৃবৃন্দ এসব কথা জানান।
তারা বলেন, 'জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কনকনে শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে টানা ২১ দিন ধরে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এ আন্দোলনে আমাদের আটজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার মধ্যে পাঁচজনকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। একজনের অবস্থা গুরুতর, গত তিনদিন থেকে না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কোনো ধরনের চিকিৎসা নিতে চান না, কিছুই খাবেন না, রাজপথে মরে থাকার শপথ নিয়েছেন।'
নেতারা জানান, বাকি দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি বাস্তবায়নে কোনো আশ্বাস দেয়া হয়নি। টানা আন্দোলনে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানানো হয়।
সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক রেশমা আক্তার বলেন, 'শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে টানা অবস্থান করে জীবন হারানোর ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবুও বয়সসীমা ৩৫ সহ চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন থেকে সরে যাব না। জীবনের বিনিময়ে যদি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীর দাবি পূরণ হয় তবুও আমরা ধন্য।'
আন্দোলনকারীরা বলেন, 'আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি যে, বিশ্ব মানবতার মা হিসেবে আপনি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে নির্বাচনী ইশতেহার দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন। এতে লাখ লাখ শিক্ষার্থী আপনার নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখবে।'
সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত ত্রিশোর্ধ্ব অনেকে এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বলে জানান তারা।
আমরণ অনশনে উপস্থিত ছিলেন সুরাইয়া ইয়াসমিন, রেশমা আক্তার, মোশাররফ সুহেল, জিয়াউর রহমান, মুসাদ্দেক আলী রাসেল, উজ্জ্বল সরকার, উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস, উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস, এস এ সজীব আহমেদ, নাজিম উদ্দিন, মাসুম বিল্লাহ, পারভেজুর রহমানসহ অনেকে।
উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার থেকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র কল্যাণ পরিষদের এ গণঅনশন শুরু হয়। এ আন্দোলন পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দিলেও তারা আন্দোলন চালিয়ে যান। এর আগে তারা অনশনের সঙ্গে বিক্ষোভের ডাকও দিয়েছেন।
এমএইচএম/এফআর/জেআইএম