টিয়া পাখি দিয়ে ভাগ্য জানলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত
প্রতিবেশীদের মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে রাজধানীর গুলশানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘পাড়া উৎসব’। শুক্রবার সকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার।
আয়োজনের মধ্যে থাকা টিয়া পাখি দিয়ে ভাগ্য গণনা করার স্টলের পাশে এসে আগ্রহ সহকারে বিষয়টি জানতে চান রবার্ট মিলার। এ সময় পাশে থাকা মেয়র আতিকুল ইসলাম বিষয়টি সম্পর্কে তাকে বুঝিয়ে বলেন। এতে রবার্ট মিলারের আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। খামে মোড়ানো ভাগ্য লেখা একটি কাগজ তার হাতে তুলে দেয় টিয়া পাখি। ভাগ্য গণনাকারী তখন কাগজটিতে কী লেখা আছে তা পড়ে শোনান।
পাশাপাশি আয়োজকদের একজন তা অনুবাদ করে রবার্ট মিলারকে শোনান। সেখানে লেখা ছিল, ‘এটা যার নামে উঠবে তিনি জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি লাভ করবেন। জীবনে উন্নতি ঘটবে...।’ এমন কথা শুনে সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মিলার।
এরপর উৎসবস্থলে দেশীয় পিঠা খেতে বসেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। এ সময় মোহাম্মদপুর থেকে আসা ওয়ালিদ নামের এক তরুণ তাকে দুটি ম্যাজিক দেখান; একটি কার্ডের অপরটি রাবারের। ম্যাজিক দুটি দেখে রবার্ট মিলার অভিভূত হয়ে যান। পাশাপাশি ম্যাজিকটি দেখে তিনি খুব আগ্রহী হলে রাবারের একটি ম্যাজিকের কৌশল তাকে শিখিয়ে দেন ওয়ালিদ। এতে তিনি খুব আনন্দ প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানান।
এরপর তিনি অনুষ্ঠানস্থলে মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে ক্যারাম ও দাবা খেলেন। পাশাপাশি বাংলার ঐতিহ্য বহনকারী গানের তালে তালে বায়স্কোপও দেখেন। এটা দেখে অভিভূত হন তিনি। পরে পুরো উৎসবস্থল ঘুরে দেখেন মেয়রের সঙ্গে।
পাড়া উৎসবের আয়োজকরা জানান, শহুরে জীবন মানুষকে একধরনের বিচ্ছিন্নতাবােধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। যেখানে প্রতিবেশীদের নিজেদের মধ্যে কোনাে যােগাযােগ নেই, যেখানে একই এলাকার ভেতরে এক প্রতিবেশীর কাছে অপর প্রতিবেশীকে আগন্তুক বলে মনে হয়, যা সামাজিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘প্রতিবেশী কমিউনিটি’কে দুর্বল করে ফেলছে।
সমাজের ক্রমবর্ধমান অনাস্থা বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলামের সহায়তায় স্টেট ইউবি ভার্সিটি অব নিউইয়র্কের অনুষদ সদস্য ও হিরােজ ফর অলের প্রতিষ্ঠাতা ড. রেহনুমা করিম, গুলশান সােসাইটির ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড সিভিক সােসাইটির আহ্বায়ক শায়ান শেরাজ, মেরিল অ্যান্ড ফোর্বস’র প্রতিষ্ঠাতা ও হিরােজ ফর অলের পর্ষদ সদস্য তাজরীন মান্না এ আয়ােজনের অন্যতম আয়ােজক হিসেবে কাজ করেছেন।
উৎসবে আগত নাহিদ হাসান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আমরা প্রতিবেশীরা এক ভবনে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করি, কিন্তু কেউ কাউকে সেভাবে চিনি না। পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও কথা হয় না। তাই সবার সঙ্গে পরিচিত হতে এবং সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে এমন উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।
অলাভজনক সংস্থা ‘হিরােজ ফর অল’র যৌথ অংশীদারিত্বে গুলশান-২ নম্বরের ৬২ নম্বর রোডে সােসাইটি ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) প্রথমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে।
পাড়া উৎসব আয়ােজনে আছে নানা ধরনের প্রতিযােগিতা। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলা, প্রতিবেশীদের জন্য ওপেন-মাইক সেশন, স্টোরিটেলিং কর্নার, সুস্বাস্থ্য ও ভালাে থাকা নিয়ে তথ্য বিষয়ক স্টল এবং শিল্পকলা ও হস্তশিল্প নিয়ে মিনি-ওয়ার্কশপ। এছাড়া প্রতিবেশীদের নিয়ে আনন্দঘন মুহূর্তের আবহ তৈরিতে রয়েছে ‘মিট অ্যান্ড গ্রিট'।
এ উৎসব আয়ােজনে সহায়তা করেছে গুলশান সােসাইটি, এমটিবি ব্যাংক, গ্রিন ডেলটা ইন্স্যুরেন্স, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, ইউরাে ভিজিল প্রাইভেট লিমিটেড, রহিম আফরােজ, এবিসি মিল্ক, অ্যাকুয়া পেইন্ট, ফ্লোওয়াটার, আলিফ গ্রুপ, চালডাল, আমরা ওয়াইফাই, কে-স্পাের্ট এবং টপ অব মাইন্ড।
এএস/এমএসএইচ/এমএস