প্রধানমন্ত্রীর পাশেও অনেক রাজাকার আছেন : গাফফার চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৫৮ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯

‘স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার সব জায়গায় রয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর (শেখ হাসিনা) পাশেও অনেক রাজাকার আছেন। তাদের নাম বললে আগামীতে আমার দেশে ফেরাও বন্ধ হয়ে যাবে’- এমন মন্তব্য করেছেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক, কলামিস্ট, 'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো অমর একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি' কালজয়ী এ গানের রচয়িতা ও ভাষাসৈনিক আবদুল গাফফার চৌধুরী।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘সম্প্রীতি, বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির বিজয়’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামক সংগঠন।

আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, ‘এখন মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরির কথা বলা হচ্ছে। দেখা যাবে, এ তালিকা তৈরি করছে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকাররা।’

‘আওয়ামী লীগের ভেতরে জামায়াতের লোক ঢুকে গেছে। তারা এখন বঙ্গবন্ধুর নাম বেশি বলে’- এমন অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার আগে তাদের (জামায়াত, রাজাকার) তালিকা করা দরকার। আওয়ামী লীগের ভেতরে জামায়াতিদের বের করে দিতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে তারা আবারও সমস্যা সৃষ্টি করবে।’

‘তারেক রহমানের কত কোটি টাকা, আল্লাহ ভালো জানেন। তিনি লন্ডনে অসুস্থতার অজুহাতে থাকেন। আসলে তিনি সুস্থ। তাকে লন্ডনের শপিংমলে স্ত্রীকে নিয়ে ভালোভাবে হাঁটতে দেখেছি। আমাকে দেখে অসুস্থতার ভান করে। তারেক রহমান তার স্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর পরিকল্পনা করছে। তার স্ত্রী ভালো মানুষ। কষ্টে তার সংসার করছে’- মন্তব্য করেন তিনি।

gaffar-002

‘বাকশাল থাকলে ভালো হতো’ উল্লেখ করে এ ভাষাসৈনিক বলেন, ‘বাকশাল করার তিন মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। এটি যাচাইয়ের সুযোগ পাননি। এটি প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের হত্যা-সন্ত্রাস হতো না। পুঁজিবাদী মাথাচাড়া দিয়ে উঠত না।’

রাজাকারকে শহীদ বলায় সংগ্রাম পত্রিকার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে- জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘কাদের মোল্লা একজন আত্মস্বীকৃত যুদ্ধাপরাধী। যার আদালতের বিচারের মাধ্যমে ফাঁসির রায় হয়েছে, রায় কার্যকরও হয়েছে। একটি পত্রিকা তাকে শহীদ বলেছে। তাদের কথা বলার ভাষা আমার নেই, এটি বললে মুখের পবিত্রতা নষ্ট হয়ে যায়। ওর মতো একটা রাজাকার, কুলাঙ্গার, জল্লাদ, কসাই তার জন্ম কী, আমরা জানি না। যার জন্মের ইতিহাস নাই, একটা খুনি, ধর্ষণকারী, বাঙালি হত্যাকারী, মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী, আমার মা-বোনের হত্যাকারী, তার কথা বলার আর কিছু নাই।’

তিনি বলেন, 'এখন সবার প্রশ্ন হচ্ছে, তার বিচার কি হবে? হ্যাঁ, তার বিচার শুরু হয়ে গেছে। সবাই কথা বললে হবে না, কাজ করতে হবে।’

‘সংগ্রাম পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে’ জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ পত্রিকার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা মন্ত্রণালয় নেবে। যেন বাংলাদেশে এ ধরনের ধৃষ্টতা কেউ দেখাতে না পারে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’র আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিকুর রহমান, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সিনিয়র সাংবাদিক হারুন হাবিব, সাবেক সচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ ও শহীদকন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী প্রমুখ।

এসআই/এমএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।