আশিকী ছুটছে তিন কোটি ছাড়িয়ে


প্রকাশিত: ০৮:২৫ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

দুই বাংলার যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘আশিকী’ চলচ্চিত্রটি চলতি বছরের শুরু থেকেই নানা কারণে আলোচিত ছিলো। এই ছবিটি দিয়েই বড় পর্দায় অভিষেক হয়েছে নুসরাত ফারিয়ার। পাশাপাশি এই নায়িকার হঠাৎ করে বলিউডে ইমরান হাশমির বিপরীতে ‘গোয়াহ’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়াটাও আশিকী ছবিকে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।

স্বাভাবিকভাবেই বড় সাফল্যের প্রত্যাশা নিয়ে কোরবানি ঈদে সারা বাংলাদেশে ‘আশিকী’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছে ১০৫টি প্রেক্ষাগৃহে। মুক্তির পর আলোচনা-সমালোচনার রেশ যেনো আরো বেড়ে গেছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে ‘আশিকী’ চলচ্চিত্রটি নিয়ে নানান জন নানান কথা ঝাড়ছেন। তবে এরমধ্যে অধিকাংশরাই দাবি করছেন আশিকী চলচ্চিত্রটি তেলেগু ভাষার ‘ইশক’ ছবির নকল। অনেকে বলছেন ছবিটি বাংলাদেশি ‘লাভ স্টেশন’ ছবির কপি। কেউ কেউ বলছেন ছবিটি আপাদমস্তক একটি ভারতীয় বাংলা ছবি। ভাষাটা এপারের মতো বাংলা হলেও এর নির্মাণ, গল্প, সংলাপ, কৃষ্টি-সবকিছুতে ওপারের ছাপটা চোখে লেগেছে। তাই যতোটা সাফল্য আশা করা হয়েছিলো ঠিক ততোটার দেখা পায়নি অঙ্কুশ-ফারিয়ার ছবিটি।

এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানার জন্য বাংলাদেশে ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার ও আশিকী ছবির একাংশের পরিচালক আবদুল আজিজের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে জানা যায় তিনি বর্তমানে ইন্ডিয়াতে আছেন। তবে আশিকী নিয়ে খোলামেলা আলাপ করেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও আলিমুল্লাহ খোকন।

জাগো নিউজের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আশিকী’ ছবিটি কোনভাবেই কোনো চলচ্চিত্রের নকল নয়। যদি কোনো চলচ্চিত্রের নকল হতো তবে আমরা অবশ্যই কপিরাইট দিতাম। সবাইকে বিষয়টা বলতাম। কারণ, এখন সবকিছুই হাতের নাগালে। আপনি ভারত কেন, যে কোনো দেশের ছবির কপি করুন না কেন, কেউ না কেউ ঠিকই সেটি ধরে ফেলবে। সেখানে এইরকম লুকোচুরি খেলার কোনো মানে নেই। তাছাড়া, ছবি দেখ ছবি নির্মাণ বিশ্বে নতুন কিছু নয়। দেবদাস বিশ্বজুড়ে অনেক জায়গাতেই নির্মিত হয়েছে। তাছাড়ও বলিউডের অনেক ছবি বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে। তবে আমরা কপি করলে সেটা বলতে দোষ কি? বলিনি কারণ আমরা তেমনটি করিনি। একটি মৌলিক রোমান্টিক ঘরানার গল্পকে পুঁজি করেই আশিকী ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে। তবে অনেক সময় রোমান্টিক ছবির গল্পগুলো কিছুকিছু সিক্যুয়েন্সে মিল চলে আসে। আর ছবিতে শাহরুখ খানের ডিডিএলজে ছবিটির কিছু দৃশ্য রাখা হয়েছে ছবিটির নান্দনিকতা বাড়াতে। ওই ছবিটি যে কোনো চলচ্চিত্র প্রেমীর কাছেই পরিচিত এবং প্রিয়। আমাদের কাছেও তাই। নিজেদের ভালো লাগাটাকে সবার মাঝে নতুন করে ছড়িয়ে দিতেই আমরা এমনটা করেছি। এর মানে পুরো ছবি নকল নয়।’

অনেকের দাবি হলে ব্যবসা করতে পারছে না আশিকী। একথার প্রেক্ষিতে ছবিটি বাম্পারহিট দাবি করে আলিমুল্লাহ খোকন বলেন, ‘ঈদের প্রথম তিন দিনে যশোরের মনিহারে সেল ছিলো সাত লাখ টাকারও বেশি। তাছাড়া সারাদেশের প্রেক্ষাগৃহ থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকার ব্যবসা করেছে আশিকী। এ পর্যন্ত কোন হল মালিক আমাদের কাছে আশিকী নিয়ে কোনোরকম অভিযোগ প্রদান করেনি। অনেকেই নানাভাবে আমাদের পিছনে লেগেছেন। ছবিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। নানা রকমের পরিসংখ্যান দেখাচ্ছেন। আমরা খতিয়ে দেখেছি এসব ঠিক নয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেখুন আমরা বাংলাদেশি। দেশকে ভালোবেসেই দেশের সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় মাধ্যমটিতে টাকা লগ্নি করেছি। আমাদের সততা আছে, পরিশ্রম আছে, ভালো কিছু করার বিশ্বাস আছে। নিন্দুকের নোংরামিতে পিছিয়ে পড়তে আমরা রাজি নই। কার কোন ছবি কত টাকার ব্যবসা করল বা না করল সেটা আমাদের বিবেচ্য নয়। মানহীন নির্মাণ আর ভিনদেশি চলচ্চিত্রের ‘কার্বন কপি’ করা কোনো ছবির সাথে আমরা নিজেদের কখনোই তুলনা করতে চাই না। আমাদের ছবিটি দুই দেশ মিলিয়ে বাম্পার ব্যবসা করেছে এটাই আমাদের জন্য আনন্দের। পাশাপাশি এদেশের মানুষ আবারো হলে যাচ্ছে এটাও দারুণ খুশির খবর। ভালো গল্প-নির্মাণ ও অভিনেতা-অভিনেত্রী থাকলে দর্শকরা ছবি কেন দেখবে না? সব মিলিয়ে আমরা খুব খুশি।’

আশিকী যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের আবদুল আজিজ ও কলকাতার অশোক পতি। ছবিতে নুসরাত ফারিয়ার বিপরীতে আছেন কলকাতার অঙ্কুশ হাজরা এবং বিশেষ একটি চরিত্রে রয়েছেন বাংলাদেশের মৌসুমী।

এলএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।