ভাই-বোনের রহস্যজনক মৃত্যু : বাবা আটক


প্রকাশিত: ১২:৪৬ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫

পারিবারিক কলহ আর স্ত্রীর সঙ্গে তিক্ত সম্পর্কের জের ধরে ময়মনসিংহে গলা টিপে ও পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে দুই শিশু সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে পাষণ্ড বাবা। এ ঘটনায় বাবা মো. অলিউল্লাহকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার গভীর রাতে সদর উপজেলার ঘাঘড়া ইউনিয়নের সুহিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আব্দুর রশিদ জানান, অমানবিক এ হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিতভাবেই ঘটিয়েছে মো. অলিউল্লাহ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তিনি।

এদিকে কোতোয়ালী মডেল থানায় শিশু দুটির মরদেহের পাশে বারবার মূর্ছা যাওয়া ভ্যানচালক বাবা মো. অলিউল­্লাহ সাংবাদিকদের জানান, গতরাতে শিশু ঐশি ছিল তার দাদীর সঙ্গে এবং নোমান ছিল তার মায়ের সঙ্গে। রাত ১২টার দিকে বাড়ি ফিরে দেখেন মা ও দাদী ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু শিশু দুটি বিছানায় নেই। এ সময় ডাক-চিৎকারে সবাই ঘুম থেকে উঠে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাদের খুঁজে পায় না তারা। পরে ভোর বেলা শিশু দুটি মরদেহ বাড়ির পাশের পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

কোতোয়ালী মডেল থানার এএসপি আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের জানায়, সদর উপজেলার ঘাঘড়া ইউনিয়নের সুহিলা গ্রামের মো. অলিউল্লাহর দুই শিশু নিখোঁজের খবর পেয়ে পুলিশ সোমবার গভীর রাতে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় শিশুদের বাবা ভ্যানচালক মো. অলিউল্লাহ ও স্ত্রী রুখসানার কথাবার্তায় সন্দেহ হয় পুলিশের।

পরে হত্যার রহস্য উদঘাটনে শিশুদের বাবা-মা, দাদা-দাদী, নানা ও চাচাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এক পর্যায়ে শিশুদের বাবা অলিউল্লাহ হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশকে জানান, স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনার জেরেই দুই সন্তানকে গলা টিপে ও পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে নিজ হাতে হত্যা করেছেন।

রুখসানার বাবা ও ভাই রকি জানান, সাত বছর আগে রোকসানা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় অলিউল্লাহর। বিয়ের পর তাদের মধ্যে বণিবনা না হওয়ায় রোকসানা বাপের বাড়ি চলে যায়। এ নিয়ে অলিউল্লাহ আত্মহত্যা করতে গেলে বাড়ির লোকজন তাকে রক্ষা করে। পরে অলিউল্লাহর মা-বাবা ও চাচা রোকসানাকে আবার বাড়ি নিয়ে আসেন।

অলিউল্লাহ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, এ সকল  ঘটনার পর থেকেই তিনি শিশুদের হত্যার পরিকল্পনা করেন। সোমবার রাতে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে মা সালমা বেগমের সঙ্গে থাকা ঘুমন্ত ঐশিকে নিয়ে পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যার পর স্ত্রী রোকসানার সঙ্গে থাকা পাঁচ মাসের ঘুমন্ত শিশু পুত্র নোমানকে তুলে নিয়ে পুকুরে লাশ ফেলে দেয়। পরে ঘরে ঢুকে নাটক সাজায়।

এ ঘটনায় রুখসানার বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান পুলিশ।

আতাউল করিম খোকন/এসএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।