যুক্তরাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে ওবামার সমালোচনায় মোদি
যুক্তরাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দ্বিমুখী নীতির সমালোচনা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার ওবামার সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই এভাবে আবহ তৈরি করে দিয়েছিলেন মোদি। তার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টসহ শীর্ষ মার্কিন নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বুঝিয়ে দেন, আফগানিস্তানে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাস গোটা দক্ষিণ এশিয়ার পক্ষে বিপদ। খবর আনন্দবাজার প্রত্রিকা।
আনন্দবাজার জানায়, বৈঠকে কথা হয়েছে আরো নানা বিষয়ে। পরিবেশ রক্ষা বা নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের জন্য স্থায়ী সদস্যপদ। কিন্তু এসবের মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উঠে এসেছে সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ। তার বক্তব্য, সন্ত্রাসের সংজ্ঞা ঠিক হয়নি বলে বিতর্ক চলতেই পারে, কিন্তু সন্ত্রাসের ভাল-মন্দ ভেদ হয় না।
পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে মোদি বলেন, ‘‘৪০ বছর ধরে ভারত সন্ত্রাসবাদের শিকার। গোটা বিশ্বেরই এটা বোঝা উচিত, সন্ত্রাস যে কোনও জায়গায় যে কাউকে আঘাত করতে পারে।’’
কূটনীতিকদের মতে, এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছেন মোদি। এখন নিউইয়র্কে রয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও। তাই সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের উপরে চাপ বাড়ালেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে কড়া বার্তা দিয়েছেন পশ্চিমা বিশ্বকেও।
দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছে নয়াদিল্লি। ভারতে আগুন জ্বালানোর ক্ষেত্রে পাক সেনা ও আইএসআইয়ের মদতের কথা যথাসম্ভব এড়িয়ে যান আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা।
আফগানিস্তানে শান্তি আনার ক্ষেত্রে তালেবানের একাংশের সঙ্গে আশরফ ঘানি সরকারের আলোচনায় পাকিস্তানের মধ্যস্থতাই চেয়েছে ওয়াশিংটন। তাই ভারতসহ গোটা বিশ্বকে শোনানো হয়েছে ‘ভাল তালেবান’, ‘খারাপ তালেবান’-এর কথা।
আনন্দবাজার আরো জানায়, জাতিসংঘের সাধারণ সভায় নিজের বক্তৃতায় সন্ত্রাসকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন ওবামা। আইএসের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর কথা তুলে জানিয়েছেন, ধর্মের সঙ্গে সন্ত্রাসের যোগ নেই। জঙ্গিরা যখন কারও গলা কেটে ফেলে, তখন তারা গোটা মানবজাতিকেই আঘাত করে।
কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার আরো জানায়, এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান নিয়ে দিল্লির উদ্বেগের কথা ওবামাকে সবিস্তার জানিয়েছেন মোদি। পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় কোনো কাজই হচ্ছে না বলে মনে করে দিল্লি। বরং মার্কিন বাহিনী সরতে শুরু করার পরে সে দেশে অস্থিরতা বাড়ছে। একাধিক বার হামলা হয়েছে ভারতীয় কনসুলেট এমনকি রাষ্ট্রদূতকে লক্ষ করেও। পাক মদতেপুষ্ট সন্ত্রাস যে ভারতসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা নষ্ট করে দিতে পারে, সে কথা আজ ওবামাকে জানিয়েছেন মোদি।
আনন্দবাজার বলছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এবং কাতারের আমিরের সঙ্গে বৈঠকেও সন্ত্রাস দমনকেই গুরুত্ব দিয়েছেন মোদি। বিশ্বকে বোঝাতে চেয়েছেন, এখনই সন্ত্রাস নিয়ে পদক্ষেপ না নিলে, আগুনে পুড়তে হবে সবাইকেই।
এসকেডি/এমএস