‘হকারমুক্ত’ নিউমার্কেট : ক্রেতারা খুব খুশি
হঠাৎ করে ঢুঁ মারলে মনে হবে মার্কেটে বড় ধরনেরে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। বড় বড় দোকানের সামনের বারান্দা ও রাস্তার পুরোটাই ফাঁকা। ক্রেতার সংখ্যাও খুবই কম। তবে যারা এসেছেন তারা খুবই স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করছেন।
সামনের বারান্দার সামনের বিশাল ফাঁকা হাঁটাচলার রাস্তায় আনুমানিক দু-তিন বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে হাঁটছেন এক দম্পতি। শিশুটি মায়ের কোল থেকে নিচে নামতে চাইছে। কোল থেকে নামাতেই শিশুটি দিল ভো দৌড়। এ দৃশ্য দেখে হাসছেন শিশুর বাবা-মা।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ দৃশ্য রাজধানীর নিউমার্কেটের। মাত্র মাসখানেক আগেও নিউমার্কেট ছিল হকারে ভর্তি। বারান্দা ও রাস্তা দখল করা, চিৎকার চেচামেচি করে ক্রেতাদের ডাকাই ছিল এখানকার নিত্যদিনের দৃশ্য।
কোনো ক্রেতা মার্কেটে প্রবেশ করা মাত্রই গুলিস্তান স্টাইলে ডাকাডাকি করতো। ভেতরের খাবার দোকানগুলো বাইরের রাস্তায় টেবিল-চেয়ার পেতে ক্রেতাদের ডাকাডাকি করতো।
কেউ খাবারের জন্য বসতে না চাইলে শুরু হতো নানা তীর্যক কথাবার্তা। মূল দোকানের বাইরের বারান্দা ও রাস্তায় হকারদের ডাকাডাকিতে ক্রেতারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। সেই নিউমার্কেট যেন এখন অচেনা। মার্কেটের কোথাও হকারের দেখা নেই। ফলে রাজধানীর যে কোনো মার্কেটের চেয়ে বর্তমানে ঢাকা নিউমার্কেটের পরিবেশ এখন খুবই ভালো।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে নিউমার্কেটের দোকানের সামনে হকারদের কারণে সাধারণ ক্রেতারা প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হন শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউমার্কেটে সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত একটি দোকানের প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ২২ টাকা। এ হিসাবে ২০০ বর্গফুট আয়তনের একটি দোকানের ভাড়া বাবদ কর্পোরেশনকে মাসে চার হাজার ৪০০ টাকা দেন দোকান মালিকরা। অথচ দোকানের সামনের বারান্দায় দুজন হকার বসিয়েই মাসে ৪০ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করছেন তারা, যা মূল দোকানের চেয়ে প্রায় ৯ গুণ বেশি।
নিউমার্কেটের ভেতর চলাচলের পথে হকার বসায় ভোগান্তিতে পড়ছেন ক্রেতারা। যত্রতত্র হকার বসায় মার্কেটের পরিবেশও দিন দিন নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া হকারদের ডাকাডাকির কারণে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন ক্রেতারা। এসব কারণে ঐতিহ্যবাহী এ মার্কেটের সুনাম রক্ষায় ব্যবসায়ীরা সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নিয়ে মার্কেট হকারমুক্ত করেছেন বলে জানা গেছে।
এমইউ/এএইচ/এমকেএইচ