রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টিতে জিয়াউর রহমানের হাত রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৩৪ এএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির জন্য সাবেক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পেছনে জিয়াউর রহমানের হাত রয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নাই।’

প্রধানমন্ত্রী বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তরিকত ফেডারেশনের সংসদ সদস্য নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারীর এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা বিষয় যদি আপনারা লক্ষ্য করেন ’৭৫ এ জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশে যে হত্যা, ক্যু এবং ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয় এবং এরপর পার্বত্য চট্টগ্রামে সমস্যাটাও সৃষ্টি হয় ’৭৬-’৭৭ সালে। আর ’৭৮ সালে এই রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হয়। এটাই বাস্তবতা।’

বর্তমান সরকার যেকোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এ ধরনের উদ্যোগও নিয়েছি।’

যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি একটা কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই- বাংলাদেশের মাটি থেকে প্রতিবেশী কোনো দেশে কেউ কোনো রকমের দেশবিরোধী বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর সুযোগ দেয়া হবে না। কোনো সন্ত্রাসীর স্থান বাংলার মাটিতে হবে না, এটা আমরা নিশ্চিত করেছি।’

তিনি বলেন, ‘কিছু বিষয় আছে যা অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, কিন্তু বাংলাদেশের মাটিকে আমরা কোনো সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করতে দেব না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীত সরকারগুলো যা করেছিল, এদেরকে আমরা এদেশ থেকে বিতাড়িত করেছি এবং বাংলাদেশ সবসময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এই নীতিতেই আমরা বিশ্বাস করি।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভারত এবং চীনের ভূমিকা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আমরা আমাদের এই প্রতিবেশী দুটি দেশের সঙ্গে ইতোমধ্যে আলোচনা করেছি এবং এ বিষয়ে তাদের সক্রিয় ভূমিকা আশা করছি।’

এ বিষয়ে মিয়ানমারের সীমান্তে ঘেঁষে অবস্থিত ভারত-চীনসহ অন্যান্য দেশ যেমন লাওস এবং থাইল্যান্ডের সঙ্গেও বাংলাদেশ আলাপ-আলোচনা চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারণ এই প্রতিটি দেশের সীমান্তেই মিয়ানমারের ছোট ছোট ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে সমস্যা লেগে রয়েছে। কাজেই এই সমস্যাগুলোর যাতে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আমাদের আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার চীন সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীকে তিনি অনুরোধ করার প্রেক্ষিতে তারা এ বিষয়ে যথাযথ ভূমিকা গ্রহণের কথা বলেন। যার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই মিয়ানমারে চীনের একটি প্রতিনিধি দল গিয়েছিল, তারা বিষয়টি আলোচনা করেছেন এবং মিয়ানমারকে তারাও চাপ দিচ্ছেন।

তাছাড়া, তার ভারত সফরকালে এবং জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তাদের মধ্যে আলাপ হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘আমি প্রত্যেকের কাছ থেকেই ভালো সাড়া পেয়েছি এবং এই সমস্যাটির যে একটা সমাধান হওয়া উচিত এখন এটা সকলেই অনুধাবন করে। তবে, তাদের দৃষ্টিভঙ্গিটা হলো মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের যে সম্পর্ক সেটা রেখে এই রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে। কাজেই তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।’

এইচএস/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।