শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নিহত সাবেক এমপি শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার। তিনি মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির বাবা।
তিনি ১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সারাদেশে ২২ দল হরতাল আহ্বান করেন। এর সমর্থনে মিছিলে নেতৃত্ব দেয়ার সময় থানার সামনেই তৎকালীন এরশাদ সরকারের লেলিয়ে দেয়া কতিপয় সন্ত্রাসী তার ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি শাহাদৎবরণ করেন।
তার শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে কালীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৭ তারিখ সকালে বনানী কবরস্থানে শহীদের কবরে শ্রদ্বাঞ্জলি ও আলোচনা সভা।
১৯৩০ সালের ১৭ মার্চ শহীদ ময়েজউদ্দিন বর্তমান গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার বড়হরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতার নাম মো. ছুরত আলী, মাতার নাম শহরবানু।
শহীদ ময়েজউদ্দিন ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা করার জন্য গঠিত `মুজিব তহবিলের` আহ্বায়ক ছিলেন। একজন বিচক্ষণ আইনজীবী ও রাজনীতিক হিসেবে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তিনি এ ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন উল্লেখযোগ্য সময় ধরে বৃহত্তর ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ এবং ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে কালিগঞ্জ নির্বাচনী এলাকা থেকে যথাক্রমে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত ছিলেন। ১৯৭৭ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ রেডক্রস (বর্তমানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট) সোসাইটির নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। একাধারে বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির (এফপিএবি) মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শহীদ ময়েজউদ্দিনের রক্তের সিঁড়ি বেয়ে ধাপে ধাপে গড়ে উঠা প্রবল গণআন্দোলনে অবশেষে সামরিক শাসক ও শাসনের পতন ঘটে। গণতন্ত্রের জয় হয়। শহীদ ময়েজউদ্দিন একজন দেশপ্রেমিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও সাধারণ জনকল্যাণে নিবেদিত প্রাণ মানুষ হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে গৌরবময় ভূমিকা পালন করায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান `স্বাধীনতা পদক`-এ ভূষিত করেন।
আমিনুল ইসলাম/এআরএ/এমএস