মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ঈদের দিনেও আন্দোলন


প্রকাশিত: ০৮:০৪ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে ২০১৫-১৬ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে ঈদের দিনেও মানববন্ধন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক মানববন্ধনের মাধ্যমে তারা এ দাবি জানান।

আগামীতে কোনো কর্মসূচি সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দাবি আদায়ে আমরা একটা চলমান আন্দোলনের মধ্যে আছি। তবে পরবর্তী কর্মসূচির কোনো তারিখ এখনও কিছু ঠিক করা হয়নি।’ তবে ২৭ তারিখে শহীদ মিনারেই আরও একটা মানববন্ধন করতে পারেন বলে জানান তিনি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় এ পরীক্ষা বাতিল করে আমরা দ্রুত একটি পরীক্ষা চাই। আমাদের দাবি আদায়ে ঈদের দিনেও আমরা একত্রিত হয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘খুব শিগগিরই দাবি আদায় না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’

গত ১৮ সেপ্টেম্বর দেশের মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষার আগের রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের অনুলিপি পাওয়া যায়। সে সব প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের মিল পাওয়া যায় বলে অভিযোগ ওঠে।

পরীক্ষার দিন প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে পিএসসির সহকারী পরিচালকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। একই অভিযোগে গত ২২ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজের তিন চিকিৎসকসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এ সব অভিযোগে সারাদেশে মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বাতিল চেয়ে আন্দোলন শুরু করে।

তার আগে রোববার সকালে শুক্রবারে অনুষ্ঠিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বাতিল এবং রোববারে প্রকাশিত ফলাফল স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। রিট আবেদনে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনার সঙ্গে রুল জারি এবং নির্দেশনা চাওয়া হয়।

পরে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জেএন দেব চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রিটের ওপর শুনানি করে তা খারিজ করে দেন।

রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ও পরিচালক,  পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক, দুদক, পুলিশ কমিশনার ও শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)-সহ সংশ্লিষ্ট ১১ জন বিবাদী ছিল।

তার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠা গত ১৯ সেপ্টেম্বরের মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল করার জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিল রিটকারী এই আইনজীবী।

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার দুদিন আগে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে ঢাকায় চারজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব, যাদের মধ্যে একজন চিকিৎসক এবং একজন একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক। মহাখালী ডিওএইচএস থেকে মঙ্গলবার রাতে ওই চারজনকে গ্রেফতারের পর বুধবার তাদের সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। ‘ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের’ পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে ৩৮ হাজার টাকা এবং ১ কোটি ২১ লাখ টাকার ১৩টি চেক জব্দ করা হয়েছে বলে জানায় আইন-শৃংখলা বাহিনী।

উল্লেখ্য, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের মধ্যে দিয়েই গত ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সারা দেশে একযোগে এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তার রোববার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। যাতে প্রায় ৫৮ দশমিক চার শতাংশ।

এফএইচ/একে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।