রাজশাহীর চামড়া ব্যবসায়ীরা হতাশ


প্রকাশিত: ০৪:৫৯ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ফাইল ছবি

গতবার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দরে চামড়া কিনতে হয়েছিলো ট্যানারি মালিকদের। সে কারণে এখনো অনেক ট্যানারি মালিকের কাছে গতবারের চামড়া মজুদ আছে। চামড়া বিক্রি না হওয়ার কারণে অনেক চামড়া ব্যবসায়ীর অর্থ লগ্নি হয়ে আছে ট্যানারিগুলোতে।

গতবারের অর্থ এখনো পাওয়া যায়নি। তার উপরে আবার কোরবানির ঈদ চলে এসেছে। গতবারের মতো এবারেও মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নিয়ে চিন্তায় আছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, কোরবানির মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার ভেড়া-ছাগল ও ৩৫ থেকে ৪০ হাজার গরু কোরবানি হয়ে থাকে। এসব কোরবানির পশুর চামড়ার বেশির ভাগ চলে যায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের হাতে।

মৌসুমি ও মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে বিপাকে রাজশাহী প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীরা। এতে জেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে লোকসানের সম্মুখীন হয়ে থাকে।

রাজশাহীতে বর্তমান সময়ে ষাঁড় জাতীয় বড় গরুর চামড়ার মূল্য দুই হাজার ৫শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হচ্ছে। মাঝারি সাইজের ষাঁড়ের চামড়ার মূল্য এক হাজার ৫শ টাকা থেকে ২ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে। গাভী বা বলদের চামড়া মানভেদে ৭শ টাকা থেকে এক হাজার ২শ টাকা পর্যন্ত হয়ে কেনাবেচা হচ্ছে। এখনো সরকারের পক্ষ থেকে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়নি। সে কারণে এখনো চিন্তিত আছেন জেলার প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহী জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব জানান, প্রতি বছর মৌসুমি ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারের বেঁধে দেয়া নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা সম্ভব হয় না। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কারণে প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীদের চামড়া কিনতে লড়াইয়ে নামতে হয়। গত মৌসুমে বেশি দামে চামড়া কিনে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করে অনেক প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ীর অর্থ এখনো লগ্নি হয়ে আছে।

সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওহাব আরো জানান, রাজশাহীতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ১৩৫ জন চামড়া ব্যবসায়ী আছে। সারা বছর অনেক কষ্ট করে চামড়া বেচা-কেনা করে সংবাদ চালালেও কোরবানির সময়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীর কাছে অসহায় হয়ে পড়েন।

ভারতে চামড়া পাচারের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশে এখন চামড়ার দাম অনেক বেশি সে কারণে চামড়া ভারতে পাচারের আশঙ্কা অনেক কম। তিনি অভিযোগ করেন, চামড়া শিল্পের বড় ক্ষতি পেছনে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দায়ী। সরকার যে দাম নির্ধারণ করবে সেই দামের চেয়ে বেশি দামে কেউ চামড়া কিনলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি ইকবাল বাহার জাগো নিউজকে জানান, এ বছর চামড়া পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ বাহিনী। এজন্য প্রতিটি জেলার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এ বছর চামড়া পাচার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আগেই সকল জেলার এসপি ও থানাগুলোর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

শাহরিয়ার অনতু/এমজেড/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।