নিউইয়র্কের পথে প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত: ০৪:২৩ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জাতিসংঘ ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আট দিনের সরকারি সফরে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে আজ সকালে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট আজ সকাল পৌনে ১০টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছে।

লন্ডনে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিন ঘণ্টা যাত্রা বিরতির পর তিনি ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে রাত ১০টায় (নিউইয়র্ক সময়) জন এফ কেনেডি (জেএফকে) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পৌঁছবেন। বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনার পর প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা সহকারে হোটেল ওয়ার্ল্ডফ অস্টোরিয়া নিউইয়র্কে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে তিনি এ হোটেলে অবস্থান করবেন।

এ বছর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনকে বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে জাতিসংঘের পরিবেশ সম্পর্কিত সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ এবং ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের টেকসই উন্নয়নে আইসিটি পুরস্কার তুলে দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে ৭০তম সাধারণ অধিবেশনের উদ্বোধনী সেশনে যোগ দেবেন। একই দিনে তিনি অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের সম্মানে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন আয়োজিত সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দেবেন।

তিনি ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। পূর্ববর্তী বছরগুলোর মতো এবারো শেখ হাসিনা, ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলা ভাষায় ভাষণ দেয়ার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে মাতৃভাষায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর চলতি অধিবেশনের এই ভাষণে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা, গণতন্ত্র, সুশাসন, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের বিষয়গুলোর উল্লেখ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি তিনি শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দফতরে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেবেন। পরের দিন প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং’র আমন্ত্রণে ‘গ্লোবাল লিডারস মিটিং অন জেন্ডার ইক্যুয়েলিটি অ্যান্ড ওমেনস এমপাওয়ারমেন্ট : এ কমিটমেন্ট টু অ্যাকশন’-এ যোগ দেবেন।

একই দিন তিনি বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংলাপে কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অগ্রাধিকার তুলে ধরে ২০১৫ পরবর্তী বিশ্বের উন্নয়ন এজেন্ডা নিয়ে অধিবেশনের প্লেনারী সেশনে ভাষণ দেবেন। একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের হিলটন মিডটাউন হোটেল তার সম্মানে প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সংবর্ধনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনা বিশ্ব শান্তিরক্ষা সম্পর্কিত এক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের সঙ্গে কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। এই সম্মেলনের উদ্যোক্তা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান, রুয়ান্ডা, উরুগুয়ে ও ইউএন এসজি।

২৯ সেপ্টেম্বর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আয়োজিত আইএসআইএল ও সহিংস জঙ্গিবাদ শীর্ষক সম্মেলনে যোগ দেবেন। তিনি এমডিজি থেকে এসডিজিতে উত্তরণ : বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন।

সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে শুক্রবার শেখ হাসিনা কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গার্লস লিড দ্য ওয়ে’ শীর্ষক ওয়ার্ল্ড লিডারস ফোরামে ভাষণ দেবেন। একই দিন তিনি হোটেল ওয়ার্ল্ডফ এস্টোভিয়ায় বিজনেস কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্টাল্ডিং অব দ্য ইউনাইটেড স্টেট অব আমেরিকার সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

এছাড়া তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত্তে ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

দেশে ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে একদিন যাত্রাবিরতি করবেন এবং সেখানে ২ অক্টোবর তাকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেয়া হবে। তিনি ৩ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।

এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।