ভাইকে আশ্রয় দেয়ায় ভাই খুন


প্রকাশিত: ১০:৪৯ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

মামাতো ভাইকে নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেয়ার অপরাধে অপর মামাতো ভাইয়ের লাঠির আঘাতে খুন হয়েছেন জিয়াউল হক জিয়া (৩৮) নামে এক যুবক।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের জাগীরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার এ মারামারির ঘটনা ঘটলেও মঙ্গলবার ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়া মারা যায়। নিহত জিয়া জাগীরপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে।

এঘটনায় নিহত জিয়াউল হক জিয়ার ছোট ভাই মনিরুল ইসলাম মনি বাদী হয়ে মামাতো ভাই রবিউলকে প্রধান আসামি করে চারঘাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে চারঘাট মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ২ নারীকে গ্রেফতার করেছে।

তারা হলেন, নিহত জিয়ার মামাতো ভাই ইসলামের স্ত্রী লালভানু বেগম (৩৫) ও তছলিমের স্ত্রী চায়না বেগম (৩৪)।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, জাগীরপাড়া গ্রামের আক্তার হোসেনের দুই ছেলে রবিউল ইসলাম ও ভোলার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পৈতৃক ভিটা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তারই প্রেক্ষিতে ১৫ দিন আগে রবিউল ইসলাম তার ভাই ভোলাকে নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তারই প্রেক্ষিতে ভোলা স্ত্রী সন্তান নিয়ে ফুপাতো ভাই জিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। আর এতেই দেখা দেয় চরম বিপত্তি। ভোলাকে আশ্রয় দেয়ার কারণে জিয়াকে প্রতিনিয়তই হুমকি দিয়ে আসছিল রবিউল ও তার দুই সৎ ভাই তছলিম ও ইসলাম আলী।

সোমবার সন্ধ্যার দিকে প্রতিপক্ষ রবিউল ইসলাম, তছলিম আলী ও ইসলাম আলীসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজন জিয়ার বাড়ির সামনে গিয়ে জিয়াকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজসহ ভোলাকে তাদের হাতে তুলে দিতে হুমকি দেয়। এ নিয়ে রবিউল ইসলামের সঙ্গে জিয়ার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে রবিউলসহ প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি জিয়াকে মারপিট করতে থাকে।

এসময় জিয়ার বাবা ইউসুফ আলী, মা মুঞ্জেরা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষরা তাদের উপরও হামলা চালায়। এতে জিয়াসহ তার বাবা ইউসুফ আলী (৬৫), মা মুঞ্জেরা বেগম (৬০), স্ত্রী পারুল বেগম (২৮), ভাই মুঞ্জু (৩৫), মনিসহ (৩০) ৮ জন আহত হন।

স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে আহত জিয়া ও তার বাবা ইউসুফ আলীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের রামেক হাসপাতালে পাঠান। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে জিয়া মারা যান।

এদিকে জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা যায়। খবর পেয়ে চারঘাট মডেল থানা পুলিশের ওসি আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিপক্ষ তছলিমের স্ত্রী চায়না বেগম ও ইসলাম আলীর স্ত্রী লালভানুকে গ্রেফতার করে।

এ বিষয়ে চারঘাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন বাড়ি ছাড়া। তবে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে প্রতিপক্ষ তছলিমের স্ত্রী চায়না ও ইসলামের স্ত্রী লালভানুকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

শাহরিয়ার অনতু/ এমএএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।