বাণিজ্যিক পরিকল্পনা না থাকলেও একের পর এক আসছে উড়োজাহাজ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৪ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০১৯

সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা না থাকলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে একের পর এক যুক্ত হচ্ছে নতুন এয়ারক্রাফট। যে কারণে সক্ষমতা থাকলেও বেশিরভাগ সময় বসে থাকছে উড়োজাহাজগুলো। দিল্লির পর মদিনা ম্যানচেস্টার রুটে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা করা হলেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইয়াঙ্গুণ রুট।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বোয়িং-এর কাছ থেকে আনা ব্র্যান্ড নিউ ১০টি উড়োজাহাজ এখন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে। ২০০৮ সালে করা চুক্তি অনুযায়ী ২০১১ সাল থেকে বিমানের বহরে একে যুক্ত হওয়া শুরু হয় বিমানের বহরে। সর্বশেষ বোয়িংটি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানে যোগ হয়েছে গেল মাসে।

যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কিনতে চাইলে অর্ডার দিয়ে কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হয়। চুক্তির পরেই বোয়িং সুনির্দিষ্ট এয়ারলাইন্সের জন্য নির্দিষ্ট মডেলের উড়োজাহাজ তৈরির কাজ শুরু করে।

চীনের হেইনান এয়ারলাইন্স দুটি ড্রিমলাইনার কেনার অর্ডার দিয়েছিল। এখন তারা আর সেগুলো নিতে আগ্রহী নয়। চীন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণেই এ অবস্থার তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ও এভিয়েশন এক্সপার্ট কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, উড়োজাহাজ দুটি কম দামে কেনার চেষ্টা করেছে বিমান। এটি ভালো খবর। পাশাপাশি খারাপ খবর হচ্ছে বিমানের কোনো সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা নেই। বাস্তব অবস্থা হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে এ যাবত শীর্ষ পদে কোনো পেশাদার এভিয়েশন এক্সপার্ট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। হলে লাভজনক বাণিজ্যিক পরিকল্পনা করতে দেখা যায়নি কখনো। একমাত্র বছরে একবার হজ ব্যবসার উপরে নির্ভর করছে বিমানের অপারেশন।

এদিকে বিমান চাচ্ছে দরকষাকষির মাধ্যমে বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে উড়োজাহাজগুলো কিনতে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিমানে যুক্ত হওয়া সর্বশেষ বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭ (রাজহংস) উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই অনুষ্ঠানে তিনি এ সংক্রান্ত ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, অত্যাধুনিক উড়োজাহাজগুলো কেনার। প্রধানমন্ত্রীর এই সবুজ সংকেত পেয়ে বিমানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়ে ওঠে। যদিও আগামী মাস থেকে ডেলিভারি পাওয়া পেয়ারগুলোর কিস্তি দিতে হবে।

এ ব্যাপারে বিমান সচিব মহিবুল হক জাগো নিউজকে বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স যে দুটি ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ কিনতে চাচ্ছে তা মূলত প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহের কারণে। কিভাবে মূল্য পরিশোধ করা হবে সে বিষয়ে কোম্পানির সাথে কথাবার্তা চলছে।

সচিব জানান, এই উড়োজাহাজ কেনায় চুক্তির বিস্তারিত সব তথ্য প্রকাশ করা হবে সহসাই। উড়োজাহাজ দুটি ডিসেম্বর মাসে ডেলিভারি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ মডেলের একটি উড়োজাহাজ ৩০০ যাত্রী পরিবহন করতে পারে। টানা ১৪ হাজার কিলোমিটার উড়তে সক্ষম এই উড়োজাহাজের দৈর্ঘ্য ২০৬ ফুট।

এই দুটি উড়োজাহাজ ছাড়াও বিমান কানাডা থেকে আরও তিনটি ড্যাশ ৮ উড়োজাহাজ কেনার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করেছে। কয়েক মাসের মধ্যে এই উড়োজাহাজ বিমানের বহরে যুক্ত হচ্ছে।

আরএম/এমআরএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।