ভারতীয় গরু আমদানি : আশঙ্কায় খামারিরা


প্রকাশিত: ১০:১১ এএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করার লক্ষ্যে ফরিদপুরে ছোট-বড় প্রায় ১৮শ খামার গড়ে উঠেছে। আর এ খামারগুলোতে ব্যাপকভাবে গরু লালন পালন করছেন খামারিরা। তবে শেষ মুহূর্তে ভারতীয় গরু আমদানি হলে ব্যবসায়ে ধস নামবে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

ফরিদপুরের বিভিন্ন খামারে গিয়ে দেখা গেছে, খামারিরা ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন। খামারের গরুগুলোর প্রতি বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন। শেষ সময় এসে খামারের গরুগুলো যেন সুস্থ্য ও সবল থাকে সেজন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে শহরতলীর নরসিংহপুরের আবু বাকারের খামারে গিয়ে দেখা যায়, ৪ জন যুবক খামারে থাকা ১৬টি গরুকে পরিচর্যা করছেন। কথা হয় খামার মালিক বাকারের সঙ্গে।

তিনি জানালেন, সংসারের সুখ-শান্তির জন্য পরিবার পরিজন রেখে তিনি বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। বিদেশে কঠোর পরিশ্রম করে কিছু টাকা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। সম্প্রতি তিনি ২৫ একর জমি লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন মৎস্য খামার ও গরু মোটাতাজা করার খামার। মৎস্য খামারে ৭ জন, গরুর খামারে ৪ জন এবং ১ জন নারীসহ এই খামারে ১২ জন বেকার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।

আবু বাকার জানালেন, তিন মাস আগে দেশি জাতের ২০টি গরু ৬ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করে খামার শুরু করেছেন। কর্মচারীদের বেতনসহ সব মিলিয়ে এ বছর গরুর খামারে খরচ হয়েছে প্রায় ৮৭ হাজার টাকা।

তিনি আরো বলেন, খামারের গরুগুলো সম্পূর্ণ দেশীয় খাদ্য দিয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে। আমি গত হাটে ৪টি গরু বিক্রয় করেছি ২ লাখ ৪০ হাজার টাকায়। ঈদের আগেই বাকি ১৬টি গরু আগামী হাটে বিক্রয় করার ইচ্ছে আছে। তবে যদি এর মধ্যে ভারতীয় গরু অতিমাত্রায় হাটে চলে আসে সেক্ষেত্রে আমাদের দেশি গরুর চাহিদা কমে যাবে এবং দামও কমে যাবে।

আবু বাকার শুধু একা নয় অন্যান্য খামারিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান তিনি। এ বছর তিনি খামার থেকে লাভবান হলে আগামীতে আরো বড় আকারে খামার গড়ে তুলবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সরকার আমাদের মতো ছোট খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ দিলে আগামীতে দেশে গরুর ঘাটতি হবে না। এমনকি আমরাও দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে গরু রফতানি করতে পারব।   

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডা. প্রভাস চন্দ্র সেন জানান, ফরিদপুরে প্রায় ছোট-বড় ১৮শটির মতো গরু মোটাতাজা করার খামার আছে। আমরা নিয়মিত এ সকল খামারে গিয়ে তদারকি করেছি।

তিনি আরো বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আগে থেকেই জেলার অনেক খামারিদের ৩ দিনব্যাপি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করি। কোন উপায়ে গরু পালন করে গরুকে সুস্থ, সবল ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল।

এসএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।