ক্যাসিনোর অধিকাংশ স্টাফ বান্দরবানের, বয়স ১৯ থেকে ২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৪ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রাজধানীর মতিঝিল থানার ১০০ মিটার দূরে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) অভিযান চালায় পুলিশ।

এদিন দুপুরে অভিযানে গিয়ে পুলিশ ক্লাবটি থেকে বিপুল পরিমাণ ক্যাসিনো সরঞ্জাম, চিপস, প্লেইং কার্ড, ছুরি, বেটিং গেম ইত্যাদি উদ্ধার করে।

bandarban

মতিঝিলে প্রায় চার হাজার স্কয়ার ফুটের এ ক্লাবে অভিযানকালে পুলিশ ক্লাবের রেজিস্টার রুমে যায়। সেখান থেকে স্টাফদের তালিকা ও বিবরণের রেজিস্টার জব্দ করা হয়।

সেগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, ক্লাবে দুই শিফটে প্রায় ৫০ জন স্টাফ কাজ করতো। তাদের অধিকাংশই বান্দরবান ও রাঙামাটির। এছাড়া সেখানে চাকরিপ্রত্যাশীদের সিভি পাওয়া গেছে। তাদের প্রায় সবাই বান্দরবান ও রাঙামাটিসহ পার্বত্য এলাকার।

পুলিশের ধারণা, সাধারণত এ ধরনের ক্যাসিনো নেপালি কিংবা অন্য দেশের নাগরিকরা পরিচালনা করে। তবে খরচ কমাতে ক্লাবটি পার্বত্য জেলার তরুণ-তরুণী ও উপজাতিদের দিয়ে চালাতো।

bandarban

কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, মোহামেডানে কর্মরতদের অধিকাংশের বয়স ১৯-২৩। তাদের কেউ কেউ এইচসএসসি পাস করেছে, কেউ আবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তারা পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যাসিনোতে কাজ করছে। কেউ ডিলার বিভাগে, কেউ আবার গেমিং বিভাগে কাজ করতো। ক্লাবে জুয়া পরিচালিত হতো সকাল ১০টা থেকে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত, মোট ১৯ ঘণ্টা। ক্লাব বন্ধ থাকত মাত্র ৫ ঘণ্টা।

কর্মচারীরা দুই শিফটে ১০ ও ৯ ঘণ্টা করে কাজ করতো। মেয়েদের ডিউটি থাকতো রাতে।

bandarban

ক্যাসিনোর বিষয়ে মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্রই অভিযানে এসেছি। কতদিন ধরে চলছে, কারা এর সঙ্গে জড়িত -এসব বিষয় তদন্ত করে দেখব। এখান থেকে যাদের নাম আসবে তারা যতই প্রভাবশালী হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফকিরাপুলের ইয়াংমেন্স ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনোতে চালানো অভিযানের মধ্য দিয়ে ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। সেখান থেকে দুই নারীসহ ১৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

ওইদিনই গুলশানের বাসা থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইয়াংমেন্স ক্লাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র, গুলি, মাদকও জব্দ করা হয়। পরে আরও কয়েকটি ক্লাবে অভিযান চলে।

bandarban

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় ফোরামে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কতিপয় নেতার নানা অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজেদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের পরই র‌্যাবের এই অভিযান শুরু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকায় ক্লাবভিত্তিক ক্যাসিনো বা জুয়ার আসর বন্ধের পর দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে এই অভিযান। পুলিশ সদর দফতর থেকে সারাদেশে জুয়া আর জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এসপিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মহানগর, জেলা ও উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত জুয়ার গডফাদার, জুয়া বোর্ড পরিচালনায় জড়িত এবং জুয়াড়িদের এলাকাভিত্তিক তালিকা তৈরিও শুরু হয়েছে।

এআর/জেইউ/এএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।