পেঁয়াজের ঝাঁজে নাকাল মধ্যবিত্ত : টিসিবিই ভরসা!
সকাল সাড়ে ১০টা (রোববার)। রাজধানীর আজিমপুরের চায়না বিল্ডিংয়ের সামনের প্রধান সড়কে টিসিবির একটি ট্রাক এসে থামল। ট্রাকের ওপর ব্যানারে লেখা, ‘এখানে টিসিবির পণ্য স্বল্পমূল্যে বিক্রি করা হয়।’ প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা। অদূরেই ভিকারুননিসা নূনের মর্নিং শিফটের ছুটি হয়েছে। স্কুল থেকে ফেরার পথে কয়েকজন অভিভাবক টিসিবির ট্রাকের সামনে থমকে দাঁড়ান। টিসিবির পেঁয়াজ কিনবেন কি কিনবেন না -তা নিয়ে তাদের মধ্যে ইতস্ততাবোধ করতে দেখা যায়। একজন অভিভাবক এগিয়ে যেতেই আরও কয়েকজন এগিয়ে গেলেন। পেঁয়াজ কিনে সন্তানদের নিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, সম্প্রতি দেশি পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি পেয়ে ৮০-৮৫ টাকা কেজি হয়েছে। মাস দুয়েক আগেও ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হতো। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকদের আয় সীমিত। পণ্যের দাম বাড়লে বিপাকে পড়তে হয়। নিরূপায় হয়ে টিসিবির বিক্রি করা ৪৫ টাকা কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ কিনলাম।
অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় গত শুক্রবার পেঁয়াজ রফতানি মূল্য তিনগুণ করেছে ভারত সরকার। ফলে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আমদানিকারক ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পেঁয়াজের দাম দু-একদিনের মধ্যে কমে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
এছাড়া রাজধানীর বেশকিছু স্পটে সীমিত পর্যায়ে টিসিবির মাধ্যমে ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়। তবে তাতেও ঝাঁজ কমেনি দেশি পেঁয়াজের।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিউমার্কেট এলাকায় পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামূলক কম। বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলাম পেঁয়াজের দাম কত? উত্তর, ‘ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বেচি (বিক্রি) না, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি এক দাম ৮০ টাকা। এক টাকাও কম হবে না।’
আজিমপুরে টিসিবির ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, আগে ৫টি স্পটে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও আজ (রোববার) থেকে আরও ৫টিসহ মোট ১০টি স্পটে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ হলেও দামে অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় চাহিদা ব্যাপক।
ট্রাকের মাধ্যমে প্রতিদিন ১ হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এমইউ/আরএস/এমএস