বাংলাদেশে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে অগ্রগতি
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাসে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। আগের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশি নবজাতক ও প্রসূতি মা বেঁচে থাকেন। তা সত্ত্বেও বিশ্বে এখনও প্রতি ১১ সেকেন্ডে একজন প্রসূতি কিংবা নবজাতকের মৃত্যু ঘটছে। জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল- ইউনিসেফ ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালের পর থেকে বিশ্বে শিশু মৃত্যুহার প্রায় অর্ধেক এবং মাতৃমৃত্যু এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি কমেছে। এ অগ্রগতি বা সাফল্যের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে সবচেয়ে অগ্রগতি ঘটানো দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, বেলারুশ, কম্বোডিয়া, কাজাখস্তান, মরক্কো, মঙ্গোলিয়া, রুয়ান্ডা, পূর্ব তিমুর ও জাম্বিয়া অন্যতম। দেশগুলোর রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়া, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিনামূল্যে মা ও শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যার সুযোগ বাড়ানোর মতো পদক্ষেপগুলো বড় ভূমিকা রেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯০ সালের পর থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যুহার কমেছে ৫৬ শতাংশ, যা সংখ্যায় ১ কোটি ৪২ লাখ থেকে কমে ২০১৮ সালে দাঁড়িয়েছে ৬২ লাখে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি ঘটেছে পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। এ অঞ্চলে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু কমেছে ৮০ শতাংশ।
অন্যদিকে ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত মাতৃমৃত্যু কমেছে ৩৮ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় এ মৃত্যু হ্রাস সবচেয়ে বেশি। এ অঞ্চলে ২০০০ সালের তুলনায় বর্তমানে ৬০ শতাংশ মাতৃমৃত্যু হ্রাস পেয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম ঘেব্রিয়েসাস বলেন, যেসব দেশে প্রত্যেককে নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয়, সেখানে নারী ও শিশুদের বেঁচে থাকার সুযোগও বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু জন্মের ঠিক আগে ও পরের সময় নবজাতক ও মায়ের অবস্থা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। বিশ্বব্যাপী এখনও প্রতিবছর ২৮ লাখ নবজাতক ও প্রসূতি মা মারা যান। এ হার প্রতি ১১ সেকেন্ডে একজন।
এ ব্যাপারে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, শিশুর জন্মের ঘটনা বিশ্বব্যাপীই আনন্দের। তবে প্রতি ১১ সেকেন্ডে যখন একটি নবজাতকের মৃত্যু ঘটে, তখন সে মৃত্যু পরিবারগুলোর জন্য ট্র্যাজেডি বয়ে আনে।
এএইচ/এমএস