এনআইডিতে রোহিঙ্গা থাকার দায় অনেকের : কবিতা খানম
রোহিঙ্গাদের ভোটার করার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত নেই দাবি করে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেছেন, রোহিঙ্গাদের এনআইডি পাওয়া বা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ঘটনায় অনেকের দায় আছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের লাভ লেনে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, আমরা মনে করি না যে, নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারী রোহিঙ্গাদের ভোটার করছে বা জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে সহযোগিতা করছে। তারপরও আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। আমাদের একটা টিম আবার এখানে আসবে। অভিযোগ যদি আসে, আমরা অবশ্যই তদন্ত করব। নির্বাচন কমিশন অবশ্যই নিজের মতো করে তদন্ত করবে। তথ্যপ্রমাণ থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা অবশ্যই নেয়া হবে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে একজন রোহিঙ্গার কাছে কার্ড (স্মার্টকার্ড) পাওয়া গেছে। ওটা ছিল ২০১৫ সালের কার্ড। এরপর ৪৬ জন রোহিঙ্গার তথ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা উদ্ধার করেছি। অবশ্য তারা কোনো কার্ড পায়নি। আমরা তাদের আলাদা করে ফেলেছি। তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নেয়া আছে। আমরা প্রথমে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করি। তারপর তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। এনআইডি দেয়ার আগে আমরা যখন বায়োমেট্রিক নেব, তখন রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক তথ্যের সঙ্গে তা যাচাই করব। রোহিঙ্গা কাউকে পাওয়া গেলে তাদের আলাদা করব। এভাবেই আমাদের সিস্টেমটা তৈরি করেছি। রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই ভোটার তালিকায় আসতে না পারে বা তারা যাতে এনআইডি না পায় সে জন্য আমরা সতর্ক আছি।
সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জন্মনিবন্ধনসহ সব ডকুমেন্ট তৈরি করে আমাদের কাছে নিয়ে আসা হচ্ছে। এখন থেকে আমরা সেগুলো ভেরিফাই করব। কিন্তু যারা সেগুলো দিচ্ছে বা যাদের মাধ্যমে পাচ্ছে এবং যারা রোহিঙ্গাদের আত্মীয় পরিচয় দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই কোনো ডকুমেন্টস না পায়। কারণ এসব ডকুমেন্টসের মাধ্যমেই কিন্তু তারা ভোটার তালিকায় আসছে বা এনআইডি পাচ্ছে।
চট্টগ্রামে নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রোহিঙ্গাদের এনআইডি দেয়ার ক্ষেত্রে জড়িত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, কারও বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ বা তথ্য-প্রমাণ আছে বলে আমার জানা নেই।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে গত ১৮ আগস্ট লাকী নামের এক নারী স্মার্টকার্ড তুলতে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গেলে তার হাতের পুরনো এনআইডিতে ১৭ ডিজিটের নম্বর দেখে কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। পরে জেরার মুখে লাকী নিজেকে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন। তিনি ২০১৪ সালে মিয়ানমার থেকে বাস্তুহারা হয়ে বাংলাদেশে আসার পর টেকনাফের মুচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন।
আবু আজাদ/বিএ/এমএস