পেস্তা বাদামের শরবত, দুধ আর পানি নিয়ে অপেক্ষা
‘যান বলছি, এখান থেকে চলে যান। ওই যে, দূরে ব্যারিকেড আছে সেখানে গিয়ে দাঁড়ান। আবার দাঁড়িয়ে আছেন যে, কথা কানে যায় না?’
রাজধানীর নীলক্ষেত মোড়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা সেখানে অপেক্ষমান একটি পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে লক্ষ্য করে ধমকের সুরে এ কথাগুলো বলছিলেন।
নারী-পুরুষ ও শিশু মিলিয়ে ৮-১০ সদস্যের একটি পরিবার আশুরার তাজিয়া মিছিলে যোগ দেয়া মানুষদেরকে পেস্তা বাদামের শরবত ও পানি খাওয়াতে সেখানে অবস্থান করছিলেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের কিছুতেই সেখানে দাঁড়াতে দিচ্ছিল না। পুলিশ কর্মকর্তা বারবার তাদের রাস্তায় যেখানে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে সেখানে গিয়ে দাঁড়াতে নির্দেশ দিচ্ছিলেন।
পুলিশের এ ধরনের ব্যবহারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন পরিবারের প্রবীণ সদস্য ষাটোর্ধ্ব আছিয়া খাতুন। বকশি বাজারের বাসিন্দা এই বৃদ্ধা বলেন, ‘পুলিশের আচরণ খুবই খারাপ। নিরাপত্তার নামে তারা খুবই বাড়াবাড়ি করছে। আমরা মিছিলে ক্লান্ত মানুষগুলোকে শরবত আর পানি খাওয়াতে এসেছি, তারা ব্যারিকেডের বাইরে দাঁড়াতে বলছে। সেখান থেকে মিছিলের মানুষকে কীভাবে খাওয়াব?’
দিনটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি আরও বললেন, আজকের দিনটি খুবই বেদনাদায়ক একটি দিন। এদিন কারবালার প্রান্তরে ইমাম হাসান ও হোসেন পানি পানি বলে চিৎকার করছিলেন। তাদের স্মরণে প্রতিবছর তারা পরিবারের ছেলে মেয়ে ভাই-বোন সকলকে নিয়ে দুধ আর পেস্তা বাদাম দিয়ে শরবত তৈরি করেন। বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসেন খাবার পানি। তাজিয়া মিছিলে যোগ দেয়া তৃষ্ণার্ত মানুষগুলোকে খাইয়ে তৃপ্তি পান বলে জানালেন তিনি।
মোহাম্মদপুর থেকে এসেছেন এক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। তারা ঘোড়াকে খাওয়ানোর জন্য বিশেষ ধরনের খাবার ও ঘোড়ার পা ধৌত করার জন্য দুধ নিয়ে এসেছেন।
১৭ দিনের নাতনিকে নিয়ে এসেছেন আরেক বৃদ্ধা। তিনি জানালেন, নাতনির মঙ্গল কামনায় তাজিয়া মিছিলের ঘরে শুয়ে সালাম করে টাকা দিয়েছেন।
এমইউ/এসআর/এমকেএইচ