নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহের নতুন পথ খুললো পুলিশ
পুলিশ এতদিন ঢাকা মহানগরের নাগরিকদের তথ্য নির্দিষ্ট ফরমে নিত। এ জন্য বাড়ি বাড়ি যেত পুলিশ, অথবা বাড়ির মালিক তথ্য থানায় গিয়ে দিয়ে আসতেন। এখন এই তথ্য ঘরে বসেই দিতে পারবেন নাগরিকরা। নগরবাসীর সুবিধার্থে সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্টে সিস্টেম (সিআইএমএস) অ্যাপ চালু করেছে ডিএমপি।
সোমবার এই অ্যাপের উদ্বোধন করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে অ্যাপটির উদ্বোধনের সময় আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘আগের ম্যানুয়ালি নাগরিক তথ্য সংগ্রহ করা হতো। থানা পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করত। পরে সব তথ্য যাচাই-বাছাই করে সিস্টেমে এন্ট্রি দেয়া হতো। এতে লোকবল ও সময় দুটিই বেশি লাগত। কিন্তু এখন এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা নিজেদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য দিতে পারবেন। পরে থানার পুলিশের গ্রাউন্ড ভেরিফিকেশন করার পর এই তথ্য সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তবে এখন ম্যানুয়ালি ও ডিজিটালি এই উভয়ভাবেই নাগরিক তথ্য সংগ্রহের কাজ করা যাবে।’
কমিশনার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, এর বাস্তব একটি প্রয়োগ হচ্ছে ডিএমপির সিআইএমএস মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। আজ থেকে অ্যাপটি গুগল প্লেস্টোরে পাওয়া যাবে। নাগরিকরা অ্যাপটি নিজেদের স্মার্টফোনে ডাউনলোড করে, ব্যবহার করতে পারবেন।
দেশের জঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনার বলেন, ২০১৬ সালের হলি আর্টিসানে মর্মান্তিক জঙ্গি হামলার পর ঢাকা মহানগরীতে তেমন বড় ধরনের জঙ্গিদের আস্তানা গড়ে উঠেনি এবং জঙ্গিরা তৈরি করতে পারেনি। এর অন্যতম একটি কারণ হলো, নাগরিক ডাটাবেস থাকার কারণে জঙ্গিরা ঢাকা শহরে বাসা ভাড়া নিতে পারেনি বা অবস্থান করতে পারেননি। জঙ্গি দমনে এই সিস্টেম একটি যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। এ ছাড়া আমাদের অপরাধ ডিটেকশন এবং প্রিভেনশন এ ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, রাহাজানি ও চাঁদাবাজি দমনেও নাগরিক তথ্য ভান্ডার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে তিনি জানান।
তথ্য সংগ্রহের সর্বশেষ পরিসংখ্যান তুলে ধরে কমিশনার বলেন, ২০১৬ সালে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া শুরু করি। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলছি, আজকে পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর ৭২ লাখ নাগরিকদের তথ্য আমাদের এই সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন আমরা যে সিআইএমএস তথ্যভান্ডার তৈরি করেছি, এর কারণে নগরীতে কেউ নিজের পরিচয় লুকিয়ে বাসা ভাড়া নিতে পারবেন না এবং বাসা তৈরিও করতে পারেন না।
এআর/জেডএ/এমকেএইচ